ঢাকা ১০:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

    রাশিয়া এইডসের টিকা তৈরি করছে, দুই বছরেই বাজারে আসার সম্ভাবনা

    ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
    • আপডেট সময় ০১:৩০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

    রাশিয়া প্রাণঘাতী রোগ অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম (এইডস)-এর বিরুদ্ধে একটি কার্যকর টিকা তৈরি করছে। যদি এই প্রকল্পটি সফল হয়, তাহলে এটি হবে বিশ্বে এইডসের প্রথম কার্যকর টিকা।

    রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তির বরাত দিয়ে রাশিয়া টুডে জানিয়েছে, রাশিয়ার চিকিৎসা ও অনুজীববিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টার ইতোমধ্যে এই টিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী দুই বছরের মধ্যেই এটি বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

    গামালিয়া সেন্টারের মহামারিবিদ্যা (এপিডেমিওলজি) বিভাগের প্রধান ভ্লাদিমির গুশচিন জানান, টিকাটি সর্বাধুনিক এমআরএনএ (mRNA) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হবে। এই প্রযুক্তিতে সরাসরি ভাইরাস ব্যবহার না করে ভাইরাসের একটি নির্দিষ্ট প্রোটিন বা জেনেটিক উপাদান মানবদেহে প্রবেশ করানো হয়, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণ শক্তিশালী করে তোলে। এই একই পদ্ধতি কোভিডের টিকার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়েছিল।

    গুশচিন বলেন, “আমরা এমন একধরনের অ্যান্টিজেন তৈরি করছি, যা মানবদেহে প্রবেশ করলে বিস্তৃতভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারবে। আমরা ইতোমধ্যে এর প্রাথমিক গবেষণা শুরু করেছি। আশা করছি, দুই বছরের মধ্যে আমরা এইডসের কার্যকর টিকা বাজারে আনতে পারব।”

    এইডস মূলত একটি রোগের উপসর্গসমষ্টি, যা হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) দ্বারা সংক্রমিত হলে দেখা দেয়। এই ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি সহজেই নানা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন। এইচআইভি ছড়ায় মূলত অনিরাপদ যৌনসম্পর্ক, ইনজেকশনের ব্যবহৃত সূঁচ এবং এইডস আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে সন্তানের শরীরে। ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হয়।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষ এইডসে মারা যান। তবে ২০১০ সাল থেকে এই রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসছে। জাতিসংঘের মতে, ২০২৪ সালে বিশ্বে এইডসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৩ লাখ, যা ২০১০ সালের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কম।

    এর আগে বিভিন্ন দেশ এইডসের টিকা তৈরির চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। তবে গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টার ইতিপূর্বে করোনাভাইরাসের প্রথম কার্যকর টিকা ‘স্পুটনিক-ভি’ তৈরি করেছিল, যার কার্যকারিতা ছিল ৯৭ শতাংশের বেশি। ৭০টিরও বেশি দেশে এই টিকা ব্যবহৃত হয়েছে। এই সাফল্যের কারণে গবেষণা মহলে প্রতিষ্ঠানটির নতুন এইডস টিকা নিয়েও আশাবাদ তৈরি হয়েছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    রাশিয়া এইডসের টিকা তৈরি করছে, দুই বছরেই বাজারে আসার সম্ভাবনা

    আপডেট সময় ০১:৩০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

    রাশিয়া প্রাণঘাতী রোগ অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম (এইডস)-এর বিরুদ্ধে একটি কার্যকর টিকা তৈরি করছে। যদি এই প্রকল্পটি সফল হয়, তাহলে এটি হবে বিশ্বে এইডসের প্রথম কার্যকর টিকা।

    রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তির বরাত দিয়ে রাশিয়া টুডে জানিয়েছে, রাশিয়ার চিকিৎসা ও অনুজীববিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টার ইতোমধ্যে এই টিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী দুই বছরের মধ্যেই এটি বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

    গামালিয়া সেন্টারের মহামারিবিদ্যা (এপিডেমিওলজি) বিভাগের প্রধান ভ্লাদিমির গুশচিন জানান, টিকাটি সর্বাধুনিক এমআরএনএ (mRNA) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হবে। এই প্রযুক্তিতে সরাসরি ভাইরাস ব্যবহার না করে ভাইরাসের একটি নির্দিষ্ট প্রোটিন বা জেনেটিক উপাদান মানবদেহে প্রবেশ করানো হয়, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণ শক্তিশালী করে তোলে। এই একই পদ্ধতি কোভিডের টিকার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়েছিল।

    গুশচিন বলেন, “আমরা এমন একধরনের অ্যান্টিজেন তৈরি করছি, যা মানবদেহে প্রবেশ করলে বিস্তৃতভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারবে। আমরা ইতোমধ্যে এর প্রাথমিক গবেষণা শুরু করেছি। আশা করছি, দুই বছরের মধ্যে আমরা এইডসের কার্যকর টিকা বাজারে আনতে পারব।”

    এইডস মূলত একটি রোগের উপসর্গসমষ্টি, যা হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) দ্বারা সংক্রমিত হলে দেখা দেয়। এই ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি সহজেই নানা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন। এইচআইভি ছড়ায় মূলত অনিরাপদ যৌনসম্পর্ক, ইনজেকশনের ব্যবহৃত সূঁচ এবং এইডস আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে সন্তানের শরীরে। ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হয়।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষ এইডসে মারা যান। তবে ২০১০ সাল থেকে এই রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসছে। জাতিসংঘের মতে, ২০২৪ সালে বিশ্বে এইডসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১৩ লাখ, যা ২০১০ সালের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কম।

    এর আগে বিভিন্ন দেশ এইডসের টিকা তৈরির চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। তবে গামালিয়া ন্যাশনাল সেন্টার ইতিপূর্বে করোনাভাইরাসের প্রথম কার্যকর টিকা ‘স্পুটনিক-ভি’ তৈরি করেছিল, যার কার্যকারিতা ছিল ৯৭ শতাংশের বেশি। ৭০টিরও বেশি দেশে এই টিকা ব্যবহৃত হয়েছে। এই সাফল্যের কারণে গবেষণা মহলে প্রতিষ্ঠানটির নতুন এইডস টিকা নিয়েও আশাবাদ তৈরি হয়েছে।