এক নববধূ, দুই বর! হিমাচলের ‘জাজড়া’ প্রথায় দুই ভাইয়ের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ সুনীতা

- আপডেট সময় ০২:৪৩:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
- / ২৬৬ বার পড়া হয়েছে
হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলার শিলাই গ্রামে এক ব্যতিক্রমী বিয়ের ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রথাগত নিয়ম ভেঙে নয়, বরং ঐতিহ্যের ধারাকে বজায় রেখেই দুই ভাই—প্রদীপ নেগি ও কপিল নেগি—একসঙ্গে বিয়ে করেছেন একই তরুণী সুনীতা চৌহানকে। বিষয়টি সমাজে তুমুল আলোড়ন তুললেও, তাঁদের দাবি—এটি হাট্টি সম্প্রদায়ের বহু পুরনো এবং সামাজিকভাবে স্বীকৃত একটি প্রথা।
বিয়ের বিস্তারিত:
গত ১২ জুলাই ট্রান্স-গিরি এলাকায় কয়েকশো গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সামাজিক আনুষ্ঠানিকতায় এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। কনে সুনীতা চৌহান কুনহাট গ্রামের বাসিন্দা। বরেরা শিলাই গ্রামের হাট্টি সম্প্রদায়ের সদস্য। এ সম্প্রদায়ে ‘জোড়িদার’ বা ‘জাজড়ো’ নামে পরিচিত এই প্রথা অনুযায়ী, এক নারী একাধিক ভাইকে একসঙ্গে বিবাহ করতে পারেন। এটি ঐতিহাসিকভাবে সম্পত্তি বিভাজন এড়াতে এবং পারিবারিক ঐক্য বজায় রাখতে চালু হয়।
বরেরা কে?
বড় ভাই প্রদীপ নেগি একজন সরকারি চাকুরে এবং ছোট ভাই কপিল নেগি বিদেশে কর্মরত। তাঁদের মতে, এই বিয়ে একান্তভাবে সম্মতির ভিত্তিতে হয়েছে এবং তাঁরা এটিকে সম্মানের বিষয় হিসেবে দেখেন।
তিনজনের প্রতিক্রিয়া:
প্রদীপ নেগি বলেন, “আমরা সামাজিকভাবে এই বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছি। এতে কোনো লুকোচুরির কিছু নেই এবং আমরা গর্বিত।” কপিল নেগি বলেন, “তিনজনের সম্মতিতেই এই সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আমরা পরিবার হিসেবে একসঙ্গে থাকব এবং একে অপরকে সহায়তা করব।” নববধূ সুনীতা চৌহান স্পষ্টভাবে বলেন, “এটি আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কেউ আমাকে চাপ দেয়নি। আমাদের সম্পর্কের মধ্যে যে বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধা আছে, সেটাকেই গুরুত্ব দিয়েই এই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাই।”
প্রথার সামাজিক প্রেক্ষাপট:
হাট্টি সম্প্রদায় মূলত হিমাচল ও উত্তরাখণ্ড সীমান্ত অঞ্চলে বসবাস করে। সম্প্রতি এই সম্প্রদায়কে তফসিলি জনজাতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ছয় বছরে শুধুমাত্র বাধানা গ্রামেই এ ধরনের পাঁচটি বিয়ে হয়েছে। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী বহুবিবাহ আইনত বৈধ নয়, তবে কিছু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সামাজিক প্রথার প্রতি বিচারব্যবস্থার নমনীয়তা রয়েছে, বিশেষত জনজাতীয় সমাজে।