এনসিপির নিবন্ধন আবেদনে ছয়টি ত্রুটি, ৩ আগস্টের মধ্যে সংশোধনের নির্দেশ ইসির

- আপডেট সময় ০৭:২০:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৭১ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে নিবন্ধনের জন্য যে আবেদন জমা দিয়েছে, তাতে ছয়টি বিষয়ে ঘাটতি বা ত্রুটি চিহ্নিত করেছে ইসি। এসব ত্রুটি সংশোধন করে আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে যথাযথ দলিলপত্র দাখিলের নির্দেশ দিয়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বরাবর আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন।
চলতি বছরের শেষদিকে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মোট ১৪৪টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে। আইন ও বিধিমালায় নির্ধারিত একাধিক শর্ত পূরণ করলেই কোনো দল নিবন্ধনের সুযোগ পায়। সেই অনুযায়ী ইসির কর্মকর্তারা আবেদনপত্রগুলোর প্রাথমিক যাচাই–বাছাই করেন। কোনো আবেদনে ঘাটতি বা ত্রুটি থাকলে সংশ্লিষ্ট দলকে সাধারণত ১৫ দিনের সময় দিয়ে তা সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়।
ইসির পাঠানো চিঠির বরাতে জানা গেছে, এনসিপির আবেদনে দলের সব কার্যকর জেলা দপ্তরের তালিকা, সম্পূর্ণ ঠিকানাসহ দেওয়া হয়নি। ঢাকা ও সিলেট জেলার দপ্তরের ভাড়ার চুক্তিপত্রে দলের নাম নেই। উপজেলা ও থানা পর্যায়ের দপ্তরগুলোর তালিকাও অসম্পূর্ণ, এমনকি ২৫টি উপজেলা বা থানায় নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় (ন্যূনতম ২০০ জন) ভোটার সদস্য পাওয়া যায়নি। ইটনা (কিশোরগঞ্জ) ও হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) উপজেলার দপ্তরগুলোর ভাড়ার চুক্তিপত্রেও দলের নাম ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা উল্লেখ নেই।
তহবিলসংক্রান্ত তথ্যেও অস্পষ্টতা রয়েছে। আবেদনে দলের মোট তহবিলের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি এবং সংযুক্ত তহবিলের উৎসের বিবরণীতেও এই তথ্য অনুপস্থিত। তাছাড়া, দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তপত্রের শেষ পাতায় কোনো স্বাক্ষর নেই, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি বলে ইসি উল্লেখ করেছে।
এছাড়া দলের গঠনতন্ত্রে সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংসদীয় বোর্ড কীভাবে প্যানেল প্রস্তুত করবে বা প্রার্থী চূড়ান্ত করবে—সেই বিধান স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আরও একটি গুরুতর ঘাটতি হিসেবে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দলটির কোনো দলিলের সঙ্গে এমন কোনো প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত হয়নি যেখানে বলা হয়েছে, দলটি সংবিধানবিরোধী নয় এবং দলটিতে ১৯৭২ সালের ‘কোলাবোরেটর অর্ডার’ বা ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট’-এর আওতায় দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি নেই।
এ বিষয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “আমরা ইসির চিঠি পেয়েছি এবং তারা যে তথ্য ও দলিলপত্র চেয়েছেন, তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জমা দেওয়া হবে।”
নির্বাচন কমিশন পরবর্তী পর্যায়ে সংশোধিত আবেদন পুনরায় যাচাই–বাছাই করবে এবং সব শর্ত পূরণকারীদের ক্ষেত্রেই মাঠপর্যায়ে তদন্ত শুরু করবে। এনসিপির পক্ষ থেকে যথাসময়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলে, নিবন্ধনের জন্য চূড়ান্ত বিবেচনায় তারা এগিয়ে যেতে পারবে কি না, তা নির্ধারণ করবে কমিশন।