গডফাদারতন্ত্র, মাফিয়াতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “শেখ হাসিনা ছিলেন একটি গডফাদার। তার অধীনে বাংলাদেশজুড়ে ছোট ছোট গডফাদার তৈরি হয়েছিল। আমরা সেই গডফাদারতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছি এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, নতুন করে আর কোনো গডফাদারকে আবির্ভূত হতে দেব না।”

শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার শহরের পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে শহীদ দৌলত ময়দানে অনুষ্ঠিত এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এনসিপির এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি নতুন পথ তৈরির শপথ নিয়ে আমরা হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত একটি স্বাধীন ও গৌরবময় বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি। বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এই জনপদ কক্সবাজার শুধু সৌন্দর্যের নয়, সাহসিকতা ও সংগ্রামের প্রতীক। এখানে সমুদ্রের সঙ্গে লড়াই করে জীবিকা নির্বাহ করেন অসংখ্য মানুষ। তাদের এই জীবনসংগ্রাম আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে স্থান পেয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “পর্যটনশিল্পের জন্য বিখ্যাত কক্সবাজারের যথাযথ উন্নয়ন হয়নি। এখানকার মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া পর্যটনশিল্প শুধু লুটপাটের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা চাই, একটি পরিবেশবান্ধব ও অধিকারনির্ভর পর্যটনশিল্প গড়ে উঠুক, যেখানে কক্সবাজারের মানুষের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।”

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “রোহিঙ্গাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর তাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা কক্সবাজারবাসীর প্রতি অবিচার করছি। রোহিঙ্গা সংকট শুধু মানবিক নয়, এটি কক্সবাজারের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার বিষয়কেও স্পর্শ করছে। তাই রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।”

তিনি এই সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ড. ইউনূস এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করব, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আপনারা এগিয়ে আসুন। রোহিঙ্গাদের যেন সম্মান ও অধিকারসহকারে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়—সেই ব্যবস্থাই নিতে হবে।”

পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

এই পথসভা থেকে এনসিপি বার্তা দিয়েছে—বাংলাদেশে আর কোনো গডফাদারতন্ত্র বা পরিবারতন্ত্র টিকতে দেওয়া হবে না। জনগণের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।