ঢাকা ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

    জাবিতে অভ্যুত্থানকালীন হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের ২৮৯ নেতা সাময়িক বহিষ্কার, বরখাস্ত ৯ শিক্ষক

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১২:৪০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৮ বার পড়া হয়েছে

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বড় ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের ২৮৯ জন নেতাকর্মীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৯ জন শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে হামলায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

    সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সিন্ডিকেট সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। এর আগে সকাল ১১টা থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে টানা সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    উপাচার্য বলেন, “আন্দোলনের সময় হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের ২৮৯ জন নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। যাদের ছাত্রত্ব শেষ, তাদের সনদ স্থগিত করা হবে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ফলাফলও স্থগিত থাকবে। এ বিষয়ে একটি অধিকতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

    তিনি আরও জানান, “আন্দোলনের সময় পুলিশের উপস্থিতিতে হামলায় অংশ নেওয়া ৯ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আরও কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে একটি স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

    এছাড়া আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম এবং রেজিস্ট্রার আবু হাসানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অবসরে যাওয়ায় তাঁদের পেনশন সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা তিনটি হল—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ হাসিনা হল ও শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। নাম পরিবর্তনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৫ জুলাইয়ের রাতকে ‘কালোরাত’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ওই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়, যেখানে কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

    এই সিদ্ধান্তগুলো দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃঙ্খলা, জবাবদিহি এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতার একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    জাবিতে অভ্যুত্থানকালীন হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের ২৮৯ নেতা সাময়িক বহিষ্কার, বরখাস্ত ৯ শিক্ষক

    আপডেট সময় ১২:৪০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বড় ধরনের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের ২৮৯ জন নেতাকর্মীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৯ জন শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে হামলায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

    সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সিন্ডিকেট সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। এর আগে সকাল ১১টা থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে টানা সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    উপাচার্য বলেন, “আন্দোলনের সময় হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের ২৮৯ জন নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। যাদের ছাত্রত্ব শেষ, তাদের সনদ স্থগিত করা হবে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ফলাফলও স্থগিত থাকবে। এ বিষয়ে একটি অধিকতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

    তিনি আরও জানান, “আন্দোলনের সময় পুলিশের উপস্থিতিতে হামলায় অংশ নেওয়া ৯ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আরও কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে একটি স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

    এছাড়া আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম এবং রেজিস্ট্রার আবু হাসানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অবসরে যাওয়ায় তাঁদের পেনশন সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা তিনটি হল—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ হাসিনা হল ও শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। নাম পরিবর্তনের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৫ জুলাইয়ের রাতকে ‘কালোরাত’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ওই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়, যেখানে কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

    এই সিদ্ধান্তগুলো দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃঙ্খলা, জবাবদিহি এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতার একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।