তিন দফা দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি

- আপডেট সময় ০১:২৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে
তিন দফা দাবিকে সামনে রেখে দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন বুধবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। ঘোষণার পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বুয়েটসহ দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত শাটডাউন কার্যকর হয়েছে।
যদিও বৃহস্পতিবার বুয়েটে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ক্যাম্পাসে স্বাভাবিকভাবেই ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি, শিক্ষার্থীরা জানান, আজকের নির্ধারিত পরীক্ষা তারা বয়কট করেছেন। বুয়েটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিমুল ইসলাম বলেন, “আমাদের আজ পরীক্ষা থাকার কথা ছিল, তবে আমরা তা বর্জন করেছি। শাটডাউন কর্মসূচি চলছে।”
সকাল ১০টায় বুয়েট ঘুরে দেখা যায়, কোনো বিভাগেই শিক্ষার্থীরা আসেননি। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনের নিরাপত্তারক্ষী গোলজার হোসেন বলেন, “আজ তো এমনিতেই সাপ্তাহিক ছুটি। তাই শিক্ষার্থীরা আসবে না।” তবে কিছু বিভাগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাভাবিকভাবে উপস্থিত ছিলেন বলে নিরাপত্তাকর্মীরা জানান। এমই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মাসুদ রানা বলেন, “গতকাল থেকেই কার্যত শাটডাউন চলছে।”
প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বুধবার সকাল ১১টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এরপর বেলা দেড়টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হওয়ার সময় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামান ব্যবহার করে এবং লাঠিচার্জ চালায়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা আবারও শাহবাগে জড়ো হন এবং রাত সাড়ে ১০টার পর ধীরে ধীরে সরে যান।
রাতেই শাহবাগে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ওয়ালী উল্লাহ জানান, আজ বিকেল পাঁচটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের কাউন্সিল হলে সভা হবে, যেখানে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বুয়েটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ সেদিন রাতেই দেশের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন অব ইঞ্জিনিয়ার্স’ ঘোষণা করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—
১. নবম গ্রেড সহকারী প্রকৌশলী পদে কেবল পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ এবং ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার নির্ধারণ।
২. দশম গ্রেডে শুধু ডিপ্লোমাধারীরা নয়, উচ্চ ডিগ্রিধারীরাও যেন আবেদন করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা।
৩. শুধুমাত্র বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্নকারীরাই যেন ‘প্রকৌশলী’ বা ‘ইঞ্জিনিয়ার’ উপাধি ব্যবহার করতে পারেন, সেই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ।
সরকার ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে।