যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমতে পারে-এডিবির আশঙ্কা

- আপডেট সময় ০২:৪৯:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
- / ২৬২ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাবে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সম্প্রতি প্রকাশিত জুলাই সংস্করণের ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক’ প্রতিবেদনে এই উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
এডিবি বলেছে, চলতি অর্থবছরে দেশের রপ্তানি ও শিল্পখাতে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে আরোপ করা পাল্টা শুল্কের প্রভাবও যুক্ত হয়েছে, যার ফলে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ধরা হয়েছে। যদিও নির্দিষ্ট হারে জিডিপি কত কমবে তা এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি, কারণ জুলাই সংস্করণে দেশভিত্তিক পূর্বাভাসের বদলে আঞ্চলিক ও সামগ্রিক বিশ্লেষণে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
তবে এডিবির এপ্রিল মাসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। এখন সেই পূর্বাভাস পুনর্বিবেচনা করছে সংস্থাটি। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যা পরে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়। নতুন এই শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিশ্লেষক ও রপ্তানিকারকরা মনে করছেন, নতুন এই শুল্ক রপ্তানি আয় এবং অর্থনীতির সামগ্রিক গতি প্রকৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে—বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে।
এদিকে মূল্যস্ফীতির দিক থেকে কিছুটা স্বস্তির ইঙ্গিত দিয়েছে এডিবি। তাদের মতে, বৈশ্বিক বাজারে পণ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা, সরকারের কঠোর আর্থিক ও রাজস্ব নীতি ইত্যাদির ফলে বিদায়ী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। একই কারণে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এপ্রিল মাসে প্রকাশিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, ওই অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত তিন বছর ধরেই দেশে উচ্চমূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, ২০২৪ সালের জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি একসময় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে পৌঁছেছিল, যা ছিল ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পরবর্তী পাঁচ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে চলে আসে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য নীতির জটিলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রতিকূলতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।