ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

    ২৩ আগস্ট ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০১:১৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

    আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কের দ্রুত উষ্ণতা বাড়ছে। এই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেই ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ আগস্ট তিনি বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা।

    পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর মঙ্গলবার রাতের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, একসময় একই দেশের অংশ থাকা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর দীর্ঘ সময় শীতল ছিল। বিশেষ করে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল এবং ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত রেখেছিল। তবে, গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে উষ্ণতা ফিরে এসেছে এবং পারস্পরিক বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।

    ইসহাক দারের এই সফরটি মূলত এপ্রিলেই হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তখন ভারতের সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, তিনি আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকা আসছেন। ডন ডটকম-এর পক্ষ থেকে তার কাছে এই সফর সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি এক কথায় ‘হ্যাঁ’ বলে নিশ্চিত করেন।

    দ্য ডন আরও জানিয়েছে, ইসহাক দার বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক সমন্বয় আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকা আসছেন। সফরকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া তার আরও বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে।

    সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। গত মাসে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পারস্পরিক কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশে নীতিগতভাবে সম্মত হয়। এই সিদ্ধান্তটি হয় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এবং বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মধ্যে এক বৈঠকে।

    এর আগে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পররাষ্ট্র দপ্তরের পরামর্শ সভায় অংশ নিতে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালোচ। গত মার্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার যৌথ ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন।

    এছাড়াও, গত ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ বিরতির পর সরকার-থেকে-সরকার সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয়, যার আওতায় পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়। গত জানুয়ারিতে দুই দেশের সেনাবাহিনী ‘বাইরের প্রভাব মোকাবিলায়’ টেকসই অংশীদারত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে।

    উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বরে করাচি থেকে চট্টগ্রামে একটি কনটেইনার জাহাজ পৌঁছায়, যা কয়েক দশকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল ছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে মিসরের কায়রোতে ডি-৮ উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্মেলনের ফাঁকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ২৩ আগস্ট ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার

    আপডেট সময় ০১:১৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

    আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কের দ্রুত উষ্ণতা বাড়ছে। এই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেই ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ আগস্ট তিনি বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা।

    পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর মঙ্গলবার রাতের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, একসময় একই দেশের অংশ থাকা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর দীর্ঘ সময় শীতল ছিল। বিশেষ করে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল এবং ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত রেখেছিল। তবে, গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে উষ্ণতা ফিরে এসেছে এবং পারস্পরিক বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।

    ইসহাক দারের এই সফরটি মূলত এপ্রিলেই হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তখন ভারতের সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, তিনি আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকা আসছেন। ডন ডটকম-এর পক্ষ থেকে তার কাছে এই সফর সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি এক কথায় ‘হ্যাঁ’ বলে নিশ্চিত করেন।

    দ্য ডন আরও জানিয়েছে, ইসহাক দার বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক সমন্বয় আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকা আসছেন। সফরকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া তার আরও বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে।

    সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। গত মাসে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পারস্পরিক কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশে নীতিগতভাবে সম্মত হয়। এই সিদ্ধান্তটি হয় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এবং বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মধ্যে এক বৈঠকে।

    এর আগে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পররাষ্ট্র দপ্তরের পরামর্শ সভায় অংশ নিতে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালোচ। গত মার্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার যৌথ ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন।

    এছাড়াও, গত ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ বিরতির পর সরকার-থেকে-সরকার সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয়, যার আওতায় পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়। গত জানুয়ারিতে দুই দেশের সেনাবাহিনী ‘বাইরের প্রভাব মোকাবিলায়’ টেকসই অংশীদারত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে।

    উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বরে করাচি থেকে চট্টগ্রামে একটি কনটেইনার জাহাজ পৌঁছায়, যা কয়েক দশকের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল ছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে মিসরের কায়রোতে ডি-৮ উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্মেলনের ফাঁকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গেও বৈঠক করেন।