তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল ছিল ক্যান্সারের মতো,অ্যাটর্নি জেনারেল

- আপডেট সময় ১১:৫২:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
- / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে এবং এটি ‘ক্যান্সারের মতো‘। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে দীর্ঘস্থায়ী গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া প্রয়োজন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির দিন ধার্যের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হওয়ার কারণে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার এবং আইনের শাসনসহ দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২১ অক্টোবর আপিল শুনানিতে তাদের প্রধান আবেদন থাকবে, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়টি বাতিল করে জনগণের জন্য গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন করে দেওয়া। তিনি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১৯ ধারায় অপরাধ করার অভিযোগও আদালতের নোটিশে আনবেন বলে জানান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানির পর সর্বোচ্চ আদালত আজ আপিল শুনানির আবেদন (লিভ গ্রান্ট) মঞ্জুর করেছেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আগামী ২১ অক্টোবর এই আপিল শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
আদালতে বিএনপির পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল), জামায়াতের পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির, এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করেন। এছাড়া পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষে শরীফ ভূইয়া এবং অপর আবেদনকারীর পক্ষে এ এস এম শাহরিয়ার কবিরও শুনানিতে অংশ নেন।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ এই ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করে দেয়। এরপর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস করা হয়, যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে।
এই রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক এবং আরেকজন ব্যক্তি পৃথক আবেদন করেন। এদিকে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারাকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।