জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ৮টা ২০ মিনিটে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে বিকাল ৫টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ঐতিহাসিক ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন তিনি।

সরকারের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আজকের ভাষণে ড. ইউনূস দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড এবং বিচার ও সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরার পাশাপাশি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণা করতে পারেন।

সূত্র অনুযায়ী, রমজানের আগেই সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। সে হিসেবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে। ২০২৬ সালের রমজান শুরু হবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি, ফলে রোজার শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই ভোট অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।

উল্লেখ্য, গত বছরের (২০২৪) ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন এবং ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। শুরুতে সরকার প্রধানের ভাষণ ৮ আগস্ট দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও, সেই দিনটিকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিকতার চেয়ে জুলাই অভ্যুত্থান দিবসকেই অধিক গুরুত্ব দিতে চাওয়ায় ৫ আগস্টকেই চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আজকের ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত আন্দোলনকারীদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানটি হবে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়। একই সঙ্গে, দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক আয়োজন করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

গত ২৮ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা যমুনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বাচনি প্রস্তুতি সংক্রান্ত বৈঠক করেন। সেখানে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি। এর আগেও ৯ জুলাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এ ছাড়া, গত জুন মাসে লন্ডন সফরের সময় ড. ইউনূস বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। ওই বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজান শুরুর আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে সংস্কার ও বিচারের অগ্রগতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সব মিলিয়ে আজ রাতের ভাষণে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও নির্বাচনের রূপরেখা নির্ধারিত হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।