আসিয়ানের (ASEAN) পূর্ণ সদস্যপদ পেতে মালয়েশিয়ার সক্রিয় সমর্থন চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (২৭ জুলাই) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কন্যা ও পিপলস জাস্টিস পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরুল ইজ্জাহ আনোয়ারের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ ২০২০ সালে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার আবেদন করেছে। আমরা আসিয়ানের অংশ হতে আগ্রহী এবং এজন্য মালয়েশিয়ার সমর্থন প্রয়োজন।”

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আসিয়ানের বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে থাকা মালয়েশিয়া যদি বাংলাদেশের আবেদন মঞ্জুর করতে সক্রিয় ভূমিকা নেয়, তবে বাংলাদেশ একসময় পূর্ণ সদস্যপদ অর্জন করবে। সাক্ষাৎকালে নুরুল ইজ্জাহ ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টা এই ঘটনায় দেশের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা অনেক মূল্যবান প্রাণ হারিয়েছি। এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা।” এ সময় তিনি নুরুল ইজ্জাহকে রাজনৈতিক সহ-সভাপতি হিসেবে নতুন দায়িত্ব পাওয়ায় শুভেচ্ছা জানান।

বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন ও অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া সংস্কারমূলক পদক্ষেপও তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আমরা এখন একটি পরিবর্তনশীল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ছাত্ররা ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ের বিদ্রোহ ছিল তরুণদের নেতৃত্বে পরিচালিত এক গণআন্দোলন, যেখানে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ একত্রিত হয়েছিল।”

তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা রাস্তাঘাট ও দেয়ালজুড়ে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে ‘জুলাই বিদ্রোহের চেতনা’ আঁকিয়ে দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিকেও দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বিপুল তরুণ জনসংখ্যা রয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি ২৭ বছরের নিচে।

এখানে শিল্প স্থাপন করলে, সেখান থেকে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে এবং উভয় দেশের অর্থনীতিই উপকৃত হবে।” বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সিনিয়র সচিব এবং এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ।