বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসনে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর হাজারো নেতাকর্মী মিথ্যা মামলা ও বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ২৪ জুলাই ঢাকার রাজপথে হাজারো তরুণ, যুবক, নারী ও শিশু তাদের অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়েই গত ১৫ বছরে বিএনপির ১২ জন সহকর্মী শহীদ হয়েছেন। শুধু জুলাই মাসেই চারজন প্রাণ দিয়েছেন। এছাড়া, এই জেলায় আওয়ামী লীগ ৭৫টি মামলা দিয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার নেতাকর্মীকে হয়রানি করেছে। অনেককে পালিয়ে থাকতে হয়েছে, ধানক্ষেতে আশ্রয় নিতে হয়েছে, আবার কারাভোগও করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকের সম্মেলন আমাদের জন্য আনন্দের সঙ্গে দুঃখেরও। আনন্দের কারণ হলো—বিএনপি মুক্ত পরিবেশে গণতান্ত্রিক দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে। দুঃখের কারণ হলো—অনেক প্রিয় সহযোদ্ধাকে হারানো। ফখরুল স্বাধীনতার ঘোষক ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, জিয়াউর রহমান এমন একটি দল গড়ে দিয়েছিলেন যা গণতন্ত্র রক্ষার জন্য লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে এবং প্রাণ দিয়েছে।

তিনি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, তিনি দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন এবং গত ১৫ বছরও ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন। একদিনের জন্যও মাথা নত করেননি। ফখরুল তারেক রহমানকে ভবিষ্যতের নেতৃত্বদাতা হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, দেশের মানুষ আজ তার দিকে তাকিয়ে আছে এবং তার নেতৃত্বেই আগামী দিনে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা হবে।

ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছে এবং মিডিয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। দলের ভিশন ২০৩০–এর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে বিএনপি ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি, রাজনৈতিক কাঠামো এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি ভেঙে যাওয়া প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের লক্ষ্যে এগোচ্ছে। বিকেল সাড়ে তিনটায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।