ঢাকা ০৭:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ইউএস ওপেন ফাইনালে ট্রাম্পের কারণে আধা ঘন্টা দেরিতে খেলা শুরু হয়

    স্পোর্টস ডেস্ক
    • আপডেট সময় ০২:০৩:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে গতকাল ইউএস ওপেন পুরুষ এককের ফাইনাল কিছুটা বিলম্বিত হয়ে শুরু হয়। তবে এই বিলম্বের পরও নিরাপত্তাজনিত কড়াকড়ির কারণে অনেক দর্শক খেলা শুরুর আগ পর্যন্ত স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারেননি। ট্রাম্পের উপস্থিতি ফুটবল বা টেনিসের দর্শকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হলেও, তার জন্য ম্যাচের পরিবেশ বেশির ভাগ সময়ই বিতর্কিত ও উত্তেজনাপূর্ণ ছিল।

    গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে অনেকেই ট্রাম্পকে দেখেই দুয়ো দিয়েছেন। ফাইনালে ইয়ানিক সিনারের বিপক্ষে কার্লোস আলকারাজের জয়ের পর, দর্শকরা করতালিতে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন, তবে ট্রাম্প ছিলেন বিমর্ষ। তাঁর ওই মুহূর্তের মুখভঙ্গি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ‘মিম’ হিসেবে।

    এর আগে ২০১৫ সালে ট্রাম্প ইউএস ওপেন দেখতে গিয়েছিলেন। পরের বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আর কোনো গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনাল দেখেননি। এবার খেলার দুই দিন আগে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট খেলা দেখতে ফ্ল্যাশিং মিডোতে উপস্থিত থাকবেন।

    এইবারের ফাইনালে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীরই নাগরিকত্ব যুক্তরাষ্ট্রের নয়; আলকারাজ স্পেনের, সিনার ইতালির। খেলা নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বেলা দুইটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্পের উপস্থিতির কারণে খেলা আধা ঘণ্টা পিছিয়ে যায়। ইউএস ওপেন আয়োজকেরা জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে এবং দর্শকদের আসনে পর্যাপ্ত সুযোগ দেয়ার জন্য খেলার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

    প্রেসিডেন্টের উপস্থিতির কারণে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে দর্শকদের জন্য মাত্র একটি প্রবেশদ্বার খোলা হয়, যেখানে বিমানবন্দর পর্যায়ের স্ক্যানিং করা হয়। এর ফলে স্টেডিয়ামের বাইরে টিকিটধারী দর্শকদের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। স্থানীয় সময় ২টা ৫০ মিনিটে আলকারাজ ও সিনার খেলা শুরু করার সময় গ্যালারির অনেক উপরের সারি এখনও ফাঁকা ছিল।

    ট্রাম্প স্টেডিয়ামে পৌঁছান স্থানীয় সময় ১টা ৪৫ মিনিটে। গ্যালারির নিচের অংশের হসপিটালিটি স্যুইটে উপস্থিত হয়ে তিনি দর্শকদের দিকে হাত নাড়েন। জাতীয় সংগীতের শুরুতে বড় পর্দায় তাঁকে দেখানো হলে কেউ উল্লাস করেন, কেউ দুয়ো দেন। জাতীয় সংগীত চলাকালে ট্রাম্পকে স্যালুট করতে দেখা যায়। দর্শকের উল্লাস দ্রুত দুয়োতে মিশে যায়। এরপর ট্রাম্পকে ঠোঁটে সামান্য হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

    গার্ডিয়ান খবরে বলা হয়েছে, খেলার প্রথম গেম শেষ হওয়ার পর বড় পর্দায় ট্রাম্পকে দেখানো হয়, এবং দর্শকরা আরও দীর্ঘ সময় ধরে দুয়ো দিতে থাকেন। ক্যামেরা সরানো হলে উল্লাস থেমে যায়। ফাইনালের আগের দিন আয়োজকরা সম্প্রচারকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, ট্রাম্পকে নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রচারে না দেখাতে।

    খেলায় সিনারকে ৬-২, ৩-৬, ৬-১, ৬-৪ সেটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইউএস ওপেন জিতেন আলকারাজ। বিজয়ীর সম্মানে দর্শকরা দাঁড়িয়ে করতালি দেন। ট্রাম্পও দাঁড়ান, তবে মুখে হাসির ছিটেফোট দেখা যায়নি; বরং বিমর্ষতার ছাপ দেখা যায়।

    আলকারাজের বিজয়ের পর ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ মেক্সিকোর প্রতি ট্রাম্পের বিরূপ মনোভাবের উদাহরণ টেনে লিখেছেন, ‘মিস্টার ট্রাম্প, আলকারাজ মেক্সিকান নন’, আবার কেউ দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে মিম তৈরি করেছেন। ইউএস ওপেনের এই ফাইনাল মুহূর্ত টেনিস–দুনিয়ার জন্য স্মরণীয় হয়ে রইল, যেখানে ট্রাম্পের উপস্থিতি বিতর্ক ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ইউএস ওপেন ফাইনালে ট্রাম্পের কারণে আধা ঘন্টা দেরিতে খেলা শুরু হয়

    আপডেট সময় ০২:০৩:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে গতকাল ইউএস ওপেন পুরুষ এককের ফাইনাল কিছুটা বিলম্বিত হয়ে শুরু হয়। তবে এই বিলম্বের পরও নিরাপত্তাজনিত কড়াকড়ির কারণে অনেক দর্শক খেলা শুরুর আগ পর্যন্ত স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারেননি। ট্রাম্পের উপস্থিতি ফুটবল বা টেনিসের দর্শকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হলেও, তার জন্য ম্যাচের পরিবেশ বেশির ভাগ সময়ই বিতর্কিত ও উত্তেজনাপূর্ণ ছিল।

    গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে অনেকেই ট্রাম্পকে দেখেই দুয়ো দিয়েছেন। ফাইনালে ইয়ানিক সিনারের বিপক্ষে কার্লোস আলকারাজের জয়ের পর, দর্শকরা করতালিতে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন, তবে ট্রাম্প ছিলেন বিমর্ষ। তাঁর ওই মুহূর্তের মুখভঙ্গি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ‘মিম’ হিসেবে।

    এর আগে ২০১৫ সালে ট্রাম্প ইউএস ওপেন দেখতে গিয়েছিলেন। পরের বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আর কোনো গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনাল দেখেননি। এবার খেলার দুই দিন আগে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট খেলা দেখতে ফ্ল্যাশিং মিডোতে উপস্থিত থাকবেন।

    এইবারের ফাইনালে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীরই নাগরিকত্ব যুক্তরাষ্ট্রের নয়; আলকারাজ স্পেনের, সিনার ইতালির। খেলা নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বেলা দুইটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্পের উপস্থিতির কারণে খেলা আধা ঘণ্টা পিছিয়ে যায়। ইউএস ওপেন আয়োজকেরা জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে এবং দর্শকদের আসনে পর্যাপ্ত সুযোগ দেয়ার জন্য খেলার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

    প্রেসিডেন্টের উপস্থিতির কারণে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে দর্শকদের জন্য মাত্র একটি প্রবেশদ্বার খোলা হয়, যেখানে বিমানবন্দর পর্যায়ের স্ক্যানিং করা হয়। এর ফলে স্টেডিয়ামের বাইরে টিকিটধারী দর্শকদের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। স্থানীয় সময় ২টা ৫০ মিনিটে আলকারাজ ও সিনার খেলা শুরু করার সময় গ্যালারির অনেক উপরের সারি এখনও ফাঁকা ছিল।

    ট্রাম্প স্টেডিয়ামে পৌঁছান স্থানীয় সময় ১টা ৪৫ মিনিটে। গ্যালারির নিচের অংশের হসপিটালিটি স্যুইটে উপস্থিত হয়ে তিনি দর্শকদের দিকে হাত নাড়েন। জাতীয় সংগীতের শুরুতে বড় পর্দায় তাঁকে দেখানো হলে কেউ উল্লাস করেন, কেউ দুয়ো দেন। জাতীয় সংগীত চলাকালে ট্রাম্পকে স্যালুট করতে দেখা যায়। দর্শকের উল্লাস দ্রুত দুয়োতে মিশে যায়। এরপর ট্রাম্পকে ঠোঁটে সামান্য হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

    গার্ডিয়ান খবরে বলা হয়েছে, খেলার প্রথম গেম শেষ হওয়ার পর বড় পর্দায় ট্রাম্পকে দেখানো হয়, এবং দর্শকরা আরও দীর্ঘ সময় ধরে দুয়ো দিতে থাকেন। ক্যামেরা সরানো হলে উল্লাস থেমে যায়। ফাইনালের আগের দিন আয়োজকরা সম্প্রচারকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, ট্রাম্পকে নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রচারে না দেখাতে।

    খেলায় সিনারকে ৬-২, ৩-৬, ৬-১, ৬-৪ সেটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইউএস ওপেন জিতেন আলকারাজ। বিজয়ীর সম্মানে দর্শকরা দাঁড়িয়ে করতালি দেন। ট্রাম্পও দাঁড়ান, তবে মুখে হাসির ছিটেফোট দেখা যায়নি; বরং বিমর্ষতার ছাপ দেখা যায়।

    আলকারাজের বিজয়ের পর ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ মেক্সিকোর প্রতি ট্রাম্পের বিরূপ মনোভাবের উদাহরণ টেনে লিখেছেন, ‘মিস্টার ট্রাম্প, আলকারাজ মেক্সিকান নন’, আবার কেউ দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে মিম তৈরি করেছেন। ইউএস ওপেনের এই ফাইনাল মুহূর্ত টেনিস–দুনিয়ার জন্য স্মরণীয় হয়ে রইল, যেখানে ট্রাম্পের উপস্থিতি বিতর্ক ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।