ঢাকা ০১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

    এটা ছিল আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত : অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৮:২৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
    • / ২৬২ বার পড়া হয়েছে

    জুলাই বিপ্লবে দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। গত বছরের ১ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে আয়োজিত এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার স্মৃতি তুলে ধরে বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন তিনি।

    স্ট্যাটাসে বাঁধন লেখেন, “রাত থেকেই মানসিকভাবে আমি অতিরিক্ত চাপে ছিলাম। তবে একধরনের উত্তেজনাও অনুভব করছিলাম, যে কারণে হয়তো সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ভোরে বিছানা থেকে উঠি, স্নিকার্স পায়ে দিই। কারণ, আমি জানতাম না আমার জীবনে আজ কী ঘটতে যাচ্ছে।”

    তিনি লেখেন, তার একমাত্র মেয়ে সেদিন মা-বাবার সঙ্গে ছিলেন। পরিবারের কেউই জানতেন না তিনি কোথায় যাচ্ছেন। তিনি শুধু বলেছিলেন, কিছু মিডিয়ার বন্ধুদের সঙ্গে একটি ইভেন্টে যাচ্ছেন। তারপর শঙ্কা নিয়েই বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে নিকেতনে যান, সেখান থেকে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও মাইক নিয়ে বের হন। সেসময় রাজধানীতে কারফিউ জারি ছিল। বাঁধন জানান, তিনি তার ড্রাইভারকে বলেছিলেন যেন কিছু ঘটে গেলে ভিডিও ধারণ করেন, যদিও ড্রাইভার ভীতসন্ত্রস্ত ছিল, ঠিক যেমন তিনিও ছিলেন।

    এরপর ক্রমেই বিভিন্ন জায়গা থেকে তারকারা, শিল্পীরা, কলাকুশলীরা ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ১১টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। বাঁধন তার বাবার গাড়ি খামারবাড়ি এলাকায় রেখে ফুটপাতে অপেক্ষা করছিলেন। পুলিশ তখন জানিয়ে দেয়, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছাকাছি হওয়ায় কোনো সভা বা প্রতিবাদ কর্মসূচি করা যাবে না। সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিতদের মধ্যে রাজীব ভাই, মোমেন ভাই ও মামুন ভাইকে প্রোগ্রাম বাতিল করতে বলেন। সবকিছু নীরবে পর্যবেক্ষণ করার পর বাঁধন ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে যেতে শুরু করেন।

    পুলিশ বারবার তাদের সরে যেতে বললে বাঁধনের সঙ্গে পুলিশের তর্ক-বিতর্ক হয়। বাঁধন জানান, “পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের ভয়ও দেখান, কারণ আমরা সবকিছুকে অবজ্ঞা করে প্রতিবাদে সোচ্চার হতে যাচ্ছিলাম।” শেষ পর্যন্ত ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে প্রতিবাদের অনুমতি দেওয়া হয়।

    তিনি আরও লেখেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় দাঁড়াই। তারা মামুন ভাইকে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু লিমা আপা, রাজীব ভাইসহ সবাই মিলে হেঁটে ফার্মগেটে চলে যাই। পুলিশ আমাদের ওপর খুশি ছিল না। পরে বৃষ্টির মধ্যে ব্যানার হাতে নিয়ে আমরা রাস্তায় দাঁড়াই।”

    এই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বাঁধন বলেন, “আমি শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচারের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করি। এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে পাওয়ারফুল মোমেন্টস। আমি কখনোই দিনটির কথা ভুলব না।”

    নিউজটি শেয়ার করুন

    এটা ছিল আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত : অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন

    আপডেট সময় ০৮:২৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

    জুলাই বিপ্লবে দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। গত বছরের ১ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে আয়োজিত এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার স্মৃতি তুলে ধরে বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন তিনি।

    স্ট্যাটাসে বাঁধন লেখেন, “রাত থেকেই মানসিকভাবে আমি অতিরিক্ত চাপে ছিলাম। তবে একধরনের উত্তেজনাও অনুভব করছিলাম, যে কারণে হয়তো সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ভোরে বিছানা থেকে উঠি, স্নিকার্স পায়ে দিই। কারণ, আমি জানতাম না আমার জীবনে আজ কী ঘটতে যাচ্ছে।”

    তিনি লেখেন, তার একমাত্র মেয়ে সেদিন মা-বাবার সঙ্গে ছিলেন। পরিবারের কেউই জানতেন না তিনি কোথায় যাচ্ছেন। তিনি শুধু বলেছিলেন, কিছু মিডিয়ার বন্ধুদের সঙ্গে একটি ইভেন্টে যাচ্ছেন। তারপর শঙ্কা নিয়েই বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে নিকেতনে যান, সেখান থেকে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও মাইক নিয়ে বের হন। সেসময় রাজধানীতে কারফিউ জারি ছিল। বাঁধন জানান, তিনি তার ড্রাইভারকে বলেছিলেন যেন কিছু ঘটে গেলে ভিডিও ধারণ করেন, যদিও ড্রাইভার ভীতসন্ত্রস্ত ছিল, ঠিক যেমন তিনিও ছিলেন।

    এরপর ক্রমেই বিভিন্ন জায়গা থেকে তারকারা, শিল্পীরা, কলাকুশলীরা ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ১১টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। বাঁধন তার বাবার গাড়ি খামারবাড়ি এলাকায় রেখে ফুটপাতে অপেক্ষা করছিলেন। পুলিশ তখন জানিয়ে দেয়, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছাকাছি হওয়ায় কোনো সভা বা প্রতিবাদ কর্মসূচি করা যাবে না। সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিতদের মধ্যে রাজীব ভাই, মোমেন ভাই ও মামুন ভাইকে প্রোগ্রাম বাতিল করতে বলেন। সবকিছু নীরবে পর্যবেক্ষণ করার পর বাঁধন ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে যেতে শুরু করেন।

    পুলিশ বারবার তাদের সরে যেতে বললে বাঁধনের সঙ্গে পুলিশের তর্ক-বিতর্ক হয়। বাঁধন জানান, “পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের ভয়ও দেখান, কারণ আমরা সবকিছুকে অবজ্ঞা করে প্রতিবাদে সোচ্চার হতে যাচ্ছিলাম।” শেষ পর্যন্ত ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে প্রতিবাদের অনুমতি দেওয়া হয়।

    তিনি আরও লেখেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় দাঁড়াই। তারা মামুন ভাইকে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু লিমা আপা, রাজীব ভাইসহ সবাই মিলে হেঁটে ফার্মগেটে চলে যাই। পুলিশ আমাদের ওপর খুশি ছিল না। পরে বৃষ্টির মধ্যে ব্যানার হাতে নিয়ে আমরা রাস্তায় দাঁড়াই।”

    এই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বাঁধন বলেন, “আমি শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচারের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করি। এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে পাওয়ারফুল মোমেন্টস। আমি কখনোই দিনটির কথা ভুলব না।”