ঢাকা ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

    গত ১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসে নিহতদের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ : প্রধান উপদেষ্টা

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৭:৫৬:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
    • / ২৬২ বার পড়া হয়েছে

    চব্বিশে জুলাই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের আগে ১৫ বছরে সংঘটিত ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর হামলা এবং তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত সকল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের তালিকা প্রস্তুত ও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

    বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় শহীদ আবরার ফাহাদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।

    প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পুরো জাতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই সম্পন্ন হবে। একইসঙ্গে গত ১৫ বছরে সংঘটিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতিটি ঘটনা তদন্তের জন্য তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোতেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সরকার ইতিমধ্যেই প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।”

    বৈঠকে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান, আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার। তিনি বলেন, “আমার ছেলেকে দেশ ও মানুষের পক্ষে কথা বলার কারণে হত্যা করা হয়েছিল। সে অসম পানি বণ্টনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য আর্তনাদ করেন। আমি চাই, যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।”

    এ সময় বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর ওপরে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান, যা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের দাবি হয়ে আছে। সেতু না থাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পড়ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

    আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীবান্ধব করে তোলার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রতি। তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো পর্যাপ্ত ল্যাব, সরঞ্জাম এবং সহায়ক পরিবেশ নেই। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।”

    তিনি বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিং ও নিপীড়নের সংস্কৃতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান এবং বলেন, “বুয়েটে এর আগেও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনারও তদন্ত ও বিচার হওয়া জরুরি।” প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন, আবরারের আত্মত্যাগ বিফলে যাবে না, এবং দেশের শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তা, সুবিচার ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়ভাবে কাজ করবে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    গত ১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসে নিহতদের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ : প্রধান উপদেষ্টা

    আপডেট সময় ০৭:৫৬:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

    চব্বিশে জুলাই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের আগে ১৫ বছরে সংঘটিত ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর হামলা এবং তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত সকল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের তালিকা প্রস্তুত ও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

    বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় শহীদ আবরার ফাহাদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।

    প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পুরো জাতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ ঘটনার বিচার অবশ্যই সম্পন্ন হবে। একইসঙ্গে গত ১৫ বছরে সংঘটিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতিটি ঘটনা তদন্তের জন্য তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলোতেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সরকার ইতিমধ্যেই প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।”

    বৈঠকে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান, আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার। তিনি বলেন, “আমার ছেলেকে দেশ ও মানুষের পক্ষে কথা বলার কারণে হত্যা করা হয়েছিল। সে অসম পানি বণ্টনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আজও তার মা ছেলের জন্য আর্তনাদ করেন। আমি চাই, যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।”

    এ সময় বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর ওপরে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান, যা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের দাবি হয়ে আছে। সেতু না থাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পড়ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

    আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীবান্ধব করে তোলার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রতি। তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো পর্যাপ্ত ল্যাব, সরঞ্জাম এবং সহায়ক পরিবেশ নেই। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।”

    তিনি বুয়েটসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিং ও নিপীড়নের সংস্কৃতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান এবং বলেন, “বুয়েটে এর আগেও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনারও তদন্ত ও বিচার হওয়া জরুরি।” প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন, আবরারের আত্মত্যাগ বিফলে যাবে না, এবং দেশের শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তা, সুবিচার ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়ভাবে কাজ করবে।