ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর চলমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৬৩ জন। রোববার (১০ আগস্ট) ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের গণহত্যামূলক অভিযানে নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৪৩০ জনে। আহত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালগুলোতে ৬১টি মৃতদেহ আনা হয়েছে এবং ৩৬৩ জন আহত হয়েছেন। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সাহায্য নিতে গিয়ে ইসরাইলি হামলায় ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩০৪ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এর ফলে সাহায্য নিতে গিয়ে নিহতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৭৮ জনে এবং ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৮৯৪ জনেরও বেশি।

দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৭ জনে, যার মধ্যে ১০০ জনই শিশু। পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫১ জনকে জিম্মি করে।

এর পরপরই হামাসকে দমন এবং জিম্মিদের মুক্ত করার অজুহাতে ইসরাইল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে বিরতির দুই মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে আইডিএফ আবারও গাজায় অভিযান শুরু করে।

এর আগে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলাও চলছে।