ছাত্র আন্দোলনের সময় ভাইরাল হওয়া এক বিতর্কিত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনায় আসা পুলিশ কর্মকর্তা ইকবাল হোসাইনকে অবশেষে বরখাস্ত করেছে সরকার। বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ওয়ারী বিভাগের সাবেক উপ-পুলিশ কমিশনার এবং বর্তমানে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন গত বছরের ২৮ আগস্ট থেকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী, এটি পলাতকের শামিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই সংশ্লিষ্ট বিধির আওতায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময় তিনি খোরপোষ ভাতা পাবেন।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে চলমান ছাত্র আন্দোলনের সময় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে কথা বলছেন ডিসি ইকবাল হোসাইন। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, “গুলি করে করে লাশ নামানো লাগছে স্যার। গুলি করি, মরে একটা, আহত হয় একটা। একটাই যায় স্যার, বাকিডি যায় না। এইটা হলো স্যার সবচেয়ে বড় আতঙ্কের এবং দুশ্চিন্তার বিষয়।”

ভিডিওটি জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন—নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত এক কর্মকর্তা কীভাবে এমন নির্দয় ও বিতর্কিত ভাষায় কথা বলতে পারেন। যদিও ভিডিওটি নিয়ে তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি, তবে পরবর্তীতে ইকবাল হোসাইনকে ওয়ারী বিভাগ থেকে সরিয়ে খুলনা রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।

অবশেষে তার অনুপস্থিতি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সরকার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করল। এই সিদ্ধান্তে পরিষ্কার যে, কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে আর হালকাভাবে নিচ্ছে না এবং শৃঙ্খলাজনিত অপরাধে কোনো ছাড় দিচ্ছে না।