গোপালগঞ্জে উত্তাপের পর কারফিউ শিথিল, শহরে থমথমে পরিস্থিতি

- আপডেট সময় ০২:৩৮:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া হামলা, সংঘর্ষ এবং প্রাণহানির ঘটনার পর জারি করা কারফিউ আংশিকভাবে শিথিল করা হয়েছে। শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টার জন্য এই শিথিলতা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
তবে কারফিউ শিথিল হলেও শহরের পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। জনমনে আতঙ্ক রয়ে গেছে, অনেকেই জরুরি প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ, আর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জনসমাগম এখনও খুবই কম। লঞ্চঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রী প্রায় নেই বললেই চলে। দু-একটি দোকান খোলা থাকলেও বাকি দোকানগুলো বন্ধ। শহরের চৌরঙ্গী, বটতলা, কালিবাড়ী, বিসিক ও থানাপাড়া এলাকাতেও একই চিত্র দেখা গেছে।
জরুরি প্রয়োজনে কিছু মানুষ ঘর থেকে বের হয়েছেন, তবে এদের মধ্যে দিনমজুরের সংখ্যাই বেশি। বিসিক এলাকায় বাজার করতে আসা সুরুজ নামে এক বৃদ্ধ জানান, “কারফিউ নেই শুনে বাজারে এসেছি, কিন্তু এখনো শহরে ভয়াবহ আতঙ্ক বিরাজ করছে। লোকজন প্রায় নেই।”
লঞ্চঘাট এলাকায় লিমন নামে এক যুবক বলেন, “জরুরি কাজে শহরে এসেছিলাম। কিন্তু কাজ হবে কি না জানি না। দোকানপাট সব বন্ধ, মনে হচ্ছে যেকোনো সময় আবার কিছু ঘটে যেতে পারে।” একই এলাকায় ইজিবাইক চালক মাহমুদ মিয়া জানান, “গত তিন দিন ধরেই গাড়ি চালাচ্ছি, কিন্তু কোনো ইনকাম নেই। আজ ভেবেছিলাম কিছু আয় হবে, কিন্তু যাত্রীরা ভয়েই ঘর থেকে বের হচ্ছে না।”
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কারফিউ শিথিল করার পর অনেকেই বের হয়েছেন। আমরা অভিযান পরিচালনা করছি, তবে সুনিশ্চিত করছি যেন নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।”
সব মিলিয়ে গোপালগঞ্জে এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফেরার লড়াই চলছে, তবে জনমনে আতঙ্ক কাটেনি বলেই চিত্র স্পষ্ট। প্রশাসনের চোখ এখনো পুরো শহরজুড়ে, আর সাধারণ মানুষ অপেক্ষা করছে স্থায়ী শান্তির।