ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

    গোপালগঞ্জে নিহত ৩ জনের মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ আদালতের : ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০২:২৩:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

    গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত রমজান কাজী, ইমন তালুকদার এবং সোহেল রানার মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ১০টায় এই সিদ্ধান্ত আসে, যখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা আদালতে সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের আবেদন করেন। আদালত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি দেন।

    গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু হবে গোপালগঞ্জ পৌর কবরস্থানে রমজান কাজীর কবর থেকে। পরে ধাপে ধাপে বাকি মরদেহগুলোরও উত্তোলন এবং ময়নাতদন্ত করা হবে।

    উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই এনসিপির পদযাত্রা শেষে গাড়িবহর নিয়ে মাদারীপুরে ফেরার পথে গোপালগঞ্জ শহরের এসকে সালেহিয়া মাদরাসার সামনে তাদের ওপর হামলা হয়। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দুষ্কৃতকারীরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দিলে হামলাকারীরা তাদের ওপরও গুলি ছোড়ে

    এই ঘটনার জেরে গোপালগঞ্জ সদর থানায় চারটি পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতিটি মামলার বাদী সদর থানার চারজন উপ-পরিদর্শক (এসআই)। মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে।
    রমজান কাজীর (১৭) মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন এসআই মো. আইয়ুব হোসেন। মামলায় বলা হয়েছে, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রমজানকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    দীপ্ত সাহা (২৭) নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন এসআই শামীম হোসেন। অভিযোগে বলা হয়, মিলন ফার্মেসির সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিরোধে হামলাকারীরা গুলি চালালে দীপ্ত গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

    সোহেল রানা মোল্লা (৩০), একজন মোবাইল ব্যবসায়ী, নিহত হন লঞ্চঘাট এলাকায় হোটেল রাজের সামনে হামলার ঘটনায়। এ মামলার বাদী এসআই আবুল কালাম আজাদ মামলায় উল্লেখ করেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হলে তাদের লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। এতে সোহেল গুরুতর আহত হন এবং পরে হাসপাতালে মৃত্যু ঘটে।

    ইমন তালুকদার হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন এসআই শেখ মিজানুর রহমান। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে গুলি ছোড়া হয়, যেখানে ইমন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

    এই চারটি মামলাই গোপালগঞ্জের রাজনীতিক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তদন্তের অগ্রগতি নির্ভর করছে ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক প্রতিবেদনের ওপর। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, আইনগত প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেক মরদেহের পূর্ণ তদন্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    গোপালগঞ্জে নিহত ৩ জনের মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ আদালতের : ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি

    আপডেট সময় ০২:২৩:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

    গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত রমজান কাজী, ইমন তালুকদার এবং সোহেল রানার মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ১০টায় এই সিদ্ধান্ত আসে, যখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা আদালতে সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের আবেদন করেন। আদালত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি দেন।

    গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু হবে গোপালগঞ্জ পৌর কবরস্থানে রমজান কাজীর কবর থেকে। পরে ধাপে ধাপে বাকি মরদেহগুলোরও উত্তোলন এবং ময়নাতদন্ত করা হবে।

    উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই এনসিপির পদযাত্রা শেষে গাড়িবহর নিয়ে মাদারীপুরে ফেরার পথে গোপালগঞ্জ শহরের এসকে সালেহিয়া মাদরাসার সামনে তাদের ওপর হামলা হয়। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দুষ্কৃতকারীরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধা দিলে হামলাকারীরা তাদের ওপরও গুলি ছোড়ে

    এই ঘটনার জেরে গোপালগঞ্জ সদর থানায় চারটি পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতিটি মামলার বাদী সদর থানার চারজন উপ-পরিদর্শক (এসআই)। মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে।
    রমজান কাজীর (১৭) মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন এসআই মো. আইয়ুব হোসেন। মামলায় বলা হয়েছে, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রমজানকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    দীপ্ত সাহা (২৭) নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন এসআই শামীম হোসেন। অভিযোগে বলা হয়, মিলন ফার্মেসির সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিরোধে হামলাকারীরা গুলি চালালে দীপ্ত গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

    সোহেল রানা মোল্লা (৩০), একজন মোবাইল ব্যবসায়ী, নিহত হন লঞ্চঘাট এলাকায় হোটেল রাজের সামনে হামলার ঘটনায়। এ মামলার বাদী এসআই আবুল কালাম আজাদ মামলায় উল্লেখ করেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হলে তাদের লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হয়। এতে সোহেল গুরুতর আহত হন এবং পরে হাসপাতালে মৃত্যু ঘটে।

    ইমন তালুকদার হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন এসআই শেখ মিজানুর রহমান। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, পুরাতন সোনালী ব্যাংকের সামনে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে গুলি ছোড়া হয়, যেখানে ইমন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

    এই চারটি মামলাই গোপালগঞ্জের রাজনীতিক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তদন্তের অগ্রগতি নির্ভর করছে ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক প্রতিবেদনের ওপর। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, আইনগত প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেক মরদেহের পূর্ণ তদন্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন।