ঢাকা ০৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

    চাঁদাবাজির অভিযোগে হতাশ ফখরুল, প্রশ্ন তুললেন বিচারহীনতা ও সংস্কারের অগ্রগতিতে

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০২:৩৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে

    সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের এক বছরেই এমন অবস্থা! যারা দেশ গড়বে, সেই তরুণরাই এখন চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ছে—এটা দেখে আমি বেদনায় নীল হয়ে গেছি।”

    সোমবার দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে যুবদলের আয়োজিত গ্রাফিতি আর্ট প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, “এত দ্রুত যদি মূল্যবোধের এই পতন ঘটে, তবে ভবিষ্যৎ কীভাবে রক্ষা পাবে? গোটা দেশ তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছে, হাসিনার পতনের পর দেশ গড়ার দায়িত্ব তাদের হাতে। কিন্তু এখন আমি জোর দিয়ে বলতে পারছি না যে দেশ নতুন করে গড়ে উঠবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আবার ফ্যাসিস্টদের উত্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”

    আন্দোলনের পরও বিচারহীনতার প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, “এক বছর হয়ে গেল, হাসিনার বিচারের কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। যারা প্রকাশ্যে হত্যা করল, তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না?” তিনি জানান, সংস্কারের প্রশ্নে বিএনপি সব ধরনের সহযোগিতা করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বাস্তব অগ্রগতি নেই। “চাপ তৈরি করে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চলছে, কিন্তু দেশের মানুষ লড়াই করতে জানে। ইতিহাস প্রমাণ করেছে, এই দেশ লড়াই করেই মুক্ত হয়েছে,”—যোগ করেন তিনি।

    তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার চেষ্টার কথাও উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “কেবল কোনো একটি দল বা ছাত্ররা একা আন্দোলন করেনি—শিশু, বৃদ্ধ, শ্রমিক, কৃষকসহ সব শ্রেণির মানুষ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল বলেই স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। এখন যদি সত্যিকারের পরিবর্তন চাই, তাহলে রিকশাচালক, হকার, কৃষকদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।”

    তরুণ প্রজন্মের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে তরুণদের হাত ধরেই পথ চলতে হবে।” সাংবাদিকদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “পত্রিকায় নানা বিষয়ে লেখা হয়, কিন্তু দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখালেখি হয় না। সাংবাদিক ভাইয়েরা কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলুন—এই ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করুন।”

    তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মী গুম, হত্যা ও গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। ডিবি অফিসে তাদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। শহীদ হয়েছেন যুবদলের ৭৯ জন, ছাত্রদলের ১৪২ জন। যার যা অবদান, তাকে তা স্বীকার করতে হবে। ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে, অথচ তার পতনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার শুরু হয়নি—এটা কি গ্রহণযোগ্য?” ফখরুল শেষ পর্যন্ত আবারও বলেন, “তারেক রহমান চেষ্টা করছেন—বাংলাদেশকে কীভাবে নতুন করে গড়ে তোলা যায়, সেই দিকেই আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে।”

    নিউজটি শেয়ার করুন

    চাঁদাবাজির অভিযোগে হতাশ ফখরুল, প্রশ্ন তুললেন বিচারহীনতা ও সংস্কারের অগ্রগতিতে

    আপডেট সময় ০২:৩৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

    সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের এক বছরেই এমন অবস্থা! যারা দেশ গড়বে, সেই তরুণরাই এখন চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ছে—এটা দেখে আমি বেদনায় নীল হয়ে গেছি।”

    সোমবার দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে যুবদলের আয়োজিত গ্রাফিতি আর্ট প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, “এত দ্রুত যদি মূল্যবোধের এই পতন ঘটে, তবে ভবিষ্যৎ কীভাবে রক্ষা পাবে? গোটা দেশ তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছে, হাসিনার পতনের পর দেশ গড়ার দায়িত্ব তাদের হাতে। কিন্তু এখন আমি জোর দিয়ে বলতে পারছি না যে দেশ নতুন করে গড়ে উঠবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আবার ফ্যাসিস্টদের উত্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”

    আন্দোলনের পরও বিচারহীনতার প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, “এক বছর হয়ে গেল, হাসিনার বিচারের কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। যারা প্রকাশ্যে হত্যা করল, তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না?” তিনি জানান, সংস্কারের প্রশ্নে বিএনপি সব ধরনের সহযোগিতা করলেও সরকারের পক্ষ থেকে বাস্তব অগ্রগতি নেই। “চাপ তৈরি করে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চলছে, কিন্তু দেশের মানুষ লড়াই করতে জানে। ইতিহাস প্রমাণ করেছে, এই দেশ লড়াই করেই মুক্ত হয়েছে,”—যোগ করেন তিনি।

    তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার চেষ্টার কথাও উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “কেবল কোনো একটি দল বা ছাত্ররা একা আন্দোলন করেনি—শিশু, বৃদ্ধ, শ্রমিক, কৃষকসহ সব শ্রেণির মানুষ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল বলেই স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। এখন যদি সত্যিকারের পরিবর্তন চাই, তাহলে রিকশাচালক, হকার, কৃষকদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।”

    তরুণ প্রজন্মের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে তরুণদের হাত ধরেই পথ চলতে হবে।” সাংবাদিকদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “পত্রিকায় নানা বিষয়ে লেখা হয়, কিন্তু দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখালেখি হয় না। সাংবাদিক ভাইয়েরা কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলুন—এই ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করুন।”

    তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মী গুম, হত্যা ও গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন। ডিবি অফিসে তাদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। শহীদ হয়েছেন যুবদলের ৭৯ জন, ছাত্রদলের ১৪২ জন। যার যা অবদান, তাকে তা স্বীকার করতে হবে। ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে, অথচ তার পতনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার শুরু হয়নি—এটা কি গ্রহণযোগ্য?” ফখরুল শেষ পর্যন্ত আবারও বলেন, “তারেক রহমান চেষ্টা করছেন—বাংলাদেশকে কীভাবে নতুন করে গড়ে তোলা যায়, সেই দিকেই আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে।”