ঢাকা ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ছাগল–কাণ্ডে আলোচিত মতিউরকে গোপন বৈঠকের সুযোগ, ১১ পুলিশ বরখাস্ত

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১২:০১:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫১ বার পড়া হয়েছে

    ‘ছাগল–কাণ্ডে’ আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার পথে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের ১১ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের একটি তদন্ত কমিটি সত্যতা পাওয়ার পর শনিবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

    ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১২ আগস্ট দুপুরে। ওই দিন কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে মতিউর রহমানকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের কার্যক্রম শেষে ফিরতি পথে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নিরালা হাড্ডি নামের এক রেস্তোরাঁয় যাত্রাবিরতি দেন স্কর্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ সদস্যরা উৎকোচ নিয়ে রেস্তোরাঁর একটি কেবিনে মতিউর রহমানকে অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেন, আর নিজেরা সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন।

    পুলিশ সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হাজতি মতিউর রহমানকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে রাখেন, যা স্পষ্টত দায়িত্বে অবহেলার শামিল।

    ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে একজন এসআই এবং বাকি ১০ জন কনস্টেবল। বরখাস্ত হওয়া এসআই হলেন আবুল কাশেম। আর বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবলরা হলেন মনিরুজ্জামান, মো. কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, মো. রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভীর রহমান, মো. আবু সাইদ মিয়া ও রবীন্দ্র দাস। তাঁদের সবাইকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

    পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এর ভিত্তিতেই ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে।

    ঘটনাস্থল নিরালা হাড্ডি রেস্তোরাঁর মালিক মো. আবুল কাশেম ভূঁইয়া নিশ্চিত করেছেন যে ঘটনাটি তাঁর রেস্তোরাঁয় ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও দেখে তিনিও এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

    জেলা কারাগারের জেল সুপার রিতেশ চাকমা জানিয়েছেন, মতিউর রহমানকে গত ১১ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ কারাগারে আনা হয়। এরপর থেকে তাঁকে তিনবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করা হয়েছে। সর্বশেষ ১২ আগস্ট তাঁকে আদালতে হাজির করা হয় এবং সেদিনই তাঁকে ফের কিশোরগঞ্জ কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে পরে, ২৬ আগস্ট তাঁকে কিশোরগঞ্জ থেকে কাশিমপুর-২ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ছাগল–কাণ্ডে আলোচিত মতিউরকে গোপন বৈঠকের সুযোগ, ১১ পুলিশ বরখাস্ত

    আপডেট সময় ১২:০১:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ‘ছাগল–কাণ্ডে’ আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার পথে দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের ১১ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের একটি তদন্ত কমিটি সত্যতা পাওয়ার পর শনিবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

    ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১২ আগস্ট দুপুরে। ওই দিন কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে মতিউর রহমানকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের কার্যক্রম শেষে ফিরতি পথে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সৈয়দনগরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নিরালা হাড্ডি নামের এক রেস্তোরাঁয় যাত্রাবিরতি দেন স্কর্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ সদস্যরা উৎকোচ নিয়ে রেস্তোরাঁর একটি কেবিনে মতিউর রহমানকে অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেন, আর নিজেরা সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন।

    পুলিশ সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হাজতি মতিউর রহমানকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে রাখেন, যা স্পষ্টত দায়িত্বে অবহেলার শামিল।

    ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে একজন এসআই এবং বাকি ১০ জন কনস্টেবল। বরখাস্ত হওয়া এসআই হলেন আবুল কাশেম। আর বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবলরা হলেন মনিরুজ্জামান, মো. কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, মো. রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভীর রহমান, মো. আবু সাইদ মিয়া ও রবীন্দ্র দাস। তাঁদের সবাইকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

    পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এর ভিত্তিতেই ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে।

    ঘটনাস্থল নিরালা হাড্ডি রেস্তোরাঁর মালিক মো. আবুল কাশেম ভূঁইয়া নিশ্চিত করেছেন যে ঘটনাটি তাঁর রেস্তোরাঁয় ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভি ফুটেজ ও ভিডিও দেখে তিনিও এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

    জেলা কারাগারের জেল সুপার রিতেশ চাকমা জানিয়েছেন, মতিউর রহমানকে গত ১১ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ কারাগারে আনা হয়। এরপর থেকে তাঁকে তিনবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করা হয়েছে। সর্বশেষ ১২ আগস্ট তাঁকে আদালতে হাজির করা হয় এবং সেদিনই তাঁকে ফের কিশোরগঞ্জ কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে পরে, ২৬ আগস্ট তাঁকে কিশোরগঞ্জ থেকে কাশিমপুর-২ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।