ঢাকা ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

    ছিনতাইয়ের দৃশ্য ভিডিও করায় গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যা

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১২:২৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৬৫ বার পড়া হয়েছে

    গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী দলের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে দেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিলেন বলে তাঁকে হত্যা করা হয়।

    ৩৮ বছর বয়সী আসাদুজ্জামান তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। ঘটনাস্থলের পাশের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানায়, ওই রাতে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র হাতে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করছিল। তাদের পেছন থেকেই আসাদুজ্জামান সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিও করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে চায়ের দোকানে ঢুকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।

    সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে মসজিদ মার্কেটের পশ্চিম পাশে কালো পোশাক পরা এক নারী হাঁটছিলেন। তখন নীল জামা পরা এক ব্যক্তি তাঁকে পেছন থেকে টেনে ধরে এবং সামনে গিয়ে তার গতিরোধ করে। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি নারীকে চড়-থাপ্পড় মারেন। ঠিক তখনই ধারালো অস্ত্র হাতে কয়েক যুবক এসে ওই ব্যক্তিকে কোপানোর চেষ্টা করে। আক্রান্ত ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া করে।

    ঘটনার কিছু আগে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান ও তাঁর সহকর্মী শামীম হোসেন চৌরাস্তার এক দোকানে বসেছিলেন। শামীম হোসেন বলেন, তারা দুজন হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন একজন নারী ও পুরুষ তাঁদের পাশ কাটিয়ে যান। এরপর কয়েকজন অস্ত্রধারী বলে ওঠে, “এই পাইছি, তোরা আয়।” তখন তুহিন মোবাইল বের করে সেই দৃশ্য ভিডিও করতে করতে তাদের পেছনে দৌড়ান। শামীম বলেন, “আমি তাঁকে খুঁজতে এগিয়ে গেলে দেখি তুহিন চায়ের দোকানে ঢুকেছে। অস্ত্রধারীরাও সঙ্গে সঙ্গে দোকানে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।”

    পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ধাওয়া খাওয়া ব্যক্তি বাদশা মিয়া বলেন, “ওই মেয়েসহ একটা টিম আছে। তারা আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে গেছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর নগরের বাসন, ভোগড়া ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ভিডিওতে যে নারীকে দেখা গেছে, তিনিও ওই চক্রের সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ। তারা বিভিন্নভাবে ফাঁদ পেতে ছিনতাই করে থাকে।

    গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার রবিউল হাসান বলেন, “সাংবাদিক তুহিনকে হত্যার আগমুহূর্তের ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে। ভিডিওতে যাঁরা আছেন তাঁরা সকলে চিহ্নিত ছিনতাইকারী দলের সদস্য। আমরা ধারণা করছি, সিসিটিভিতে দেখা নারীও দলের সদস্য। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।”

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ছিনতাইয়ের দৃশ্য ভিডিও করায় গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যা

    আপডেট সময় ১২:২৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

    গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী দলের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে দেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিলেন বলে তাঁকে হত্যা করা হয়।

    ৩৮ বছর বয়সী আসাদুজ্জামান তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। ঘটনাস্থলের পাশের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানায়, ওই রাতে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র হাতে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করছিল। তাদের পেছন থেকেই আসাদুজ্জামান সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিও করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে চায়ের দোকানে ঢুকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।

    সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে মসজিদ মার্কেটের পশ্চিম পাশে কালো পোশাক পরা এক নারী হাঁটছিলেন। তখন নীল জামা পরা এক ব্যক্তি তাঁকে পেছন থেকে টেনে ধরে এবং সামনে গিয়ে তার গতিরোধ করে। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি নারীকে চড়-থাপ্পড় মারেন। ঠিক তখনই ধারালো অস্ত্র হাতে কয়েক যুবক এসে ওই ব্যক্তিকে কোপানোর চেষ্টা করে। আক্রান্ত ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া করে।

    ঘটনার কিছু আগে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান ও তাঁর সহকর্মী শামীম হোসেন চৌরাস্তার এক দোকানে বসেছিলেন। শামীম হোসেন বলেন, তারা দুজন হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন একজন নারী ও পুরুষ তাঁদের পাশ কাটিয়ে যান। এরপর কয়েকজন অস্ত্রধারী বলে ওঠে, “এই পাইছি, তোরা আয়।” তখন তুহিন মোবাইল বের করে সেই দৃশ্য ভিডিও করতে করতে তাদের পেছনে দৌড়ান। শামীম বলেন, “আমি তাঁকে খুঁজতে এগিয়ে গেলে দেখি তুহিন চায়ের দোকানে ঢুকেছে। অস্ত্রধারীরাও সঙ্গে সঙ্গে দোকানে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।”

    পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ধাওয়া খাওয়া ব্যক্তি বাদশা মিয়া বলেন, “ওই মেয়েসহ একটা টিম আছে। তারা আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে গেছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর নগরের বাসন, ভোগড়া ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ভিডিওতে যে নারীকে দেখা গেছে, তিনিও ওই চক্রের সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ। তারা বিভিন্নভাবে ফাঁদ পেতে ছিনতাই করে থাকে।

    গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার রবিউল হাসান বলেন, “সাংবাদিক তুহিনকে হত্যার আগমুহূর্তের ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে। ভিডিওতে যাঁরা আছেন তাঁরা সকলে চিহ্নিত ছিনতাইকারী দলের সদস্য। আমরা ধারণা করছি, সিসিটিভিতে দেখা নারীও দলের সদস্য। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।”