জাপা নিষিদ্ধের পক্ষে জামাত ও এনসিপি থাকলেও বিএনপি’র বিভিন্ন মত

- আপডেট সময় ১১:২৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৬১ বার পড়া হয়েছে
চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বাসভবন ‘যমুনা’য় পৃথক বৈঠক করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
এই বৈঠকগুলোতে জুলাই সনদ, আসন্ন সংসদ নির্বাচন, নুরুল হক নুরের ওপর হামলা এবং জাতীয় পার্টিকে (জাপা) নিষিদ্ধ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। জামায়াত ও এনসিপি জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দিলেও, বিএনপি কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
বিএনপি: বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, তারা নির্বাচন নিয়ে আশ্বস্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই, বিলম্বের কোনো সুযোগ নেই।” জামায়াতের অভিযোগের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলবেন, তাঁর এই এখতিয়ার রয়েছে।” নুরের ওপর হামলাকে তিনি ‘গর্হিত কাজ’ উল্লেখ করে এর তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য কোনো একটি শক্তি এই ধরনের কাজ করছে।” তবে তিনি দাবি করেন যে, বৈঠকে জাপাকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।
জামায়াতে ইসলামী: জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা, তা নিয়ে তাদের শঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হলে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ সংকুচিত হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, একটি দলের (বিএনপি) কারণে সনদ আটকে থাকতে পারে না। তিনি গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান। ডা. তাহের আরও বলেন যে, জাপা আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ ছিল, তাই তাদের ব্যাপারেও আওয়ামী লীগের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
এনসিপি: জামায়াতের মতো এনসিপিও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, তারা গণপরিষদ নির্বাচনসহ কিছু দাবি জানিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, জাপা ‘ফ্যাসিস্টের সহযোগী’ হিসেবে অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দিতে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে, তাই তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত। নুরের ওপর হামলাকে তিনি ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠক শেষে জানান, ড. ইউনূস বলেছেন যে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, “কেউ যদি নির্বাচনের কোনো বিকল্প নিয়ে ভাবে, সেটা হবে এই জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক।” প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।
• বিএনপি: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
• জামায়াত: ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, মিয়া গোলাম পরওয়ার, রফিকুল ইসলাম খান এবং ড. হামিদুর রহমান আযাদ।
• এনসিপি: আরিফুল ইসলাম আদীব, হাসনাত আবদুল্লাহ, হান্নান মাসউদ ও তাসনিম জারা।