জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকে একবিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, গত এক বছর ধরে ছাড় দেওয়া হয়েছে, জুলাই ঘোষণাপত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু জুলাই সনদে কোনো ধরনের ছাড় মেনে নেওয়া হবে না।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫‘-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, জনগণের পক্ষ থেকে যে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা এবং নতুন বন্দোবস্তের কথা বলা হয়েছে, তার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র নিশ্চিত হবে এবং স্বৈরাচার আর ফিরে আসতে পারবে না। রাষ্ট্রকাঠামোকে গণতান্ত্রিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আর এই জুলাই সনদের ব্যাপারে একবিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না।

নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের প্রজন্মকে প্রতারিত করার জন্য সব ধরনের আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাহাত্তর-পরবর্তী বাংলাদেশে কীভাবে লুটপাট হয়েছে, রক্ষীবাহিনী তৈরি করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে এবং বাকশাল কায়েম করা হয়েছে, তা আমরা দেখেছি। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর ছাত্রসমাজকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা রক্ষা করা হয়নি। একইভাবে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে এবং এর প্রজন্মকে প্রতারিত করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “সমীকরণ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি এখনো রাজপথে আছে।” তিনি জানান, তারা নির্বাচন চান এবং ভোটাধিকারের জন্য লড়াই ছিল, কিন্তু একই সঙ্গে দেশের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাওয়াও জরুরি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকট এখন স্থিতিশীলতা ও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা। যদি রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে না পারে এবং ছাড় দেওয়ার মানসিকতা তৈরি না হয়, তাহলে আরেকটি ‘১/১১’ আসবে, কারণ ইতিহাসে এটাই দেখা গেছে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বসেই করতে হবে। যদি তারা ব্যর্থ হয়, তাহলে অরাজনৈতিক শক্তি ও বিভিন্ন বৈদেশিক শক্তি লাভবান হবে। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি গত এক বছর বারবার ছাড় দিয়েছে, কিন্তু এখন ছাড় দেওয়ার সময় শেষ, এবার আদায় করে নেওয়া হবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে তারা যেতে পারবে না। ওই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসতে পারবে না।