ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ক্যাম্পাস জুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে শত শত শিক্ষার্থী হাসিমুখে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট দিয়ে বের হয়ে অনেকে জানিয়েছেন, বহু প্রতীক্ষিত এই সুযোগ তাদের জীবনে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।

শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ পরিবেশে ভোট দিতে পেরে শিক্ষার্থীদের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দ আর প্রত্যাশার কথা। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এ নির্বাচন থেকে উঠে আসবে যোগ্য ও কার্যকর নেতৃত্ব, যারা শিক্ষার্থীদের অধিকার ও কল্যাণে কাজ করবে।

সকাল থেকেই টিএসসি চত্বরে জমে ওঠে নির্বাচনী উৎসব। বিভিন্ন আবাসিক হল ও বিভাগ থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা এসে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন। অনেকেই জানান, ডাকসুর এই ভোট কেবল প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি তাদের জন্য এক আনন্দ-উৎসব। ভোট দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করছেন। তাদের অনেকের মতে, দীর্ঘদিন পর গণতান্ত্রিক পরিবেশে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা সত্যিই অনন্য।

ভোট দিয়ে শিক্ষার্থী লায়লা রহমান বলেন, “আজকের দিনটা আমাদের জন্য উৎসবের দিন। এত বড় একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হতে পেরে সত্যিই দারুণ লাগছে।”

আরেক শিক্ষার্থী সামিরা জানান, “ভোটের লাইনটা বেশ লম্বা ছিল, তবে আনন্দের সঙ্গে অপেক্ষা করেছি। কারণ এটি আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বাছাইয়ের মুহূর্ত।”

বৈশাখী মুখার্জী বলেন, “ক্যাম্পাসে এমন আনন্দঘন পরিবেশ আগে কখনো দেখিনি। ভোট দিয়ে মনে হলো আমরা সত্যিই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ।”

শিক্ষার্থী তানজিলা হক জানান, “দীর্ঘ লাইন হলেও সবাই হাসিমুখে দাঁড়িয়ে ছিল। মনে হলো আমরা সবাই একসঙ্গে গণতন্ত্রের পাঠ নিচ্ছি।”

এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে শান্তিপূর্ণভাবে চলছে ভোটগ্রহণ। শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ভোটকেন্দ্রের বাইরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে আলোচনা— কারা জিততে পারে, কারা নেতৃত্বে আসতে পারে এবং আগামী দিনের ডাকসু কেমন হবে।

উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে ডাকসুর ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রার্থী লড়ছেন। নারী প্রার্থীদের মধ্যেও ভিপি পদে রয়েছেন ৫ জন, জিএস পদে একজন এবং এজিএস পদে ৪ জন।