ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামীকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে হবে।

এবারের নির্বাচনে ডাকসুর ব্যালটের আকার বড় হয়েছে; ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট পাঁচ পৃষ্ঠার এবং হল সংসদের ব্যালট এক পৃষ্ঠার। ভোট দিতে হবে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) শিট ব্যবহার করে। ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল সংসদের ১৮টি পদের মধ্যে ১৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৩৫। সব মিলিয়ে ভোটারদের মোট ৪১টি ভোট দিতে হবে।

ভোট দেওয়ার নিয়মকানুন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ রিটার্নিং অফিসারের অফিস ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। এই ভিডিওচিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেখানো হয়েছে। এছাড়া ভোটারদের উৎসাহিত করতে তিনটি অনুষদ ও একটি ইনস্টিটিউটে সভা করা হয়েছে, যেখানে নতুন ভোটারদের ভোটপ্রদানের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

ভোটার নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে পোলিং কর্মকর্তার কাছে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি কার্ড অথবা পে-ইন স্লিপ দেখাবেন। অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড অথবা লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দেওয়া হবে এবং ভোটার তালিকায় স্বাক্ষর করবেন।

ভোটার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ব্যালট কক্ষে প্রবেশ করতে হবে। মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ নিষিদ্ধ। ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে স্পষ্টভাবে ক্রস চিহ্ন দিতে হবে এবং তারপর নির্ধারিত ব্যালট বক্সে ফেলে ভোট প্রদান সম্পন্ন করতে হবে। কেন্দ্রীয় সংসদ এবং হল সংসদের জন্য আলাদা ব্যালট বক্স রাখা হয়েছে। ব্যালট পেপার ভাঁজ না করে তা নির্ধারিত বক্সে ফেলে দিতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য এবার প্রথমবার ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা ব্রেইল পড়তে পারেন না, তারা অন্য একজনের সহযোগিতায় সাধারণ নিয়মে ভোট দিতে পারবেন। ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটদানের জন্য সাতটি হল থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর তালিকা পাওয়া গেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর ব্রেইল ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন।

শারমীন কবীর বলেন, “ব্রেইল পদ্ধতিতে ডাকসুর ব্যালট পেপার ৩০ পাতার হবে, যা একটি পাতলা বুকলেটের মতো। ব্যালটের শুরুতে সূচিপত্র থাকবে, যেখানে ভোটাররা কোন পাতায় কোন পদের তালিকা আছে তা সহজেই খুঁজে পাবেন। হল সংসদের ব্যালট ৩ থেকে ৪ পাতার হবে। যাদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা আছে এবং ব্রেইল পড়তে পারেন, তারা এই পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারবেন। যারা ব্রেইল পড়তে পারবে না, তারা একজন সহায়কের মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন এবং পোলিং কর্মকর্তারাও তাদের সাহায্য করবেন।”

এইভাবে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে স্বচ্ছ, সহজ এবং সমন্বিত ভোট প্রদান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।