আগামী নির্বাচনে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের সঙ্গে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে একচুলও সরে আসবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জনগণের রায়ে সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক ও কল্যাণরাষ্ট্রে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।

শুক্রবার, ৮ আগস্ট, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এসব মন্তব্য করেন তিনি। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী ১২ দলীয় জোট, সমমনা জোট, এলডিপি এবং লেবার পার্টির নেতৃবৃন্দ।

সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় তারেক রহমান বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের সংগ্রাম ও আন্দোলনের পথ পেরিয়ে আমরা জুলাইয়ে ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার সম্মিলিত গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। এই ঐক্য ও প্রতিজ্ঞা ধরে রাখতে হবে। তিনি প্রত্যেক অংশীদার দলকে পূর্বের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক জোটের শীর্ষ নেতারা জানান, তারেক রহমান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, একসঙ্গে নির্বাচন এবং সরকার গঠনের যে কমিটমেন্ট বা এগ্রিমেন্ট করা হয়েছে, বিএনপি সেই প্রতিশ্রুতি থেকে শস্য পরিমাণও সরে আসবে না। ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদাও বলেন, বিএনপি চূড়ান্তভাবে জোটবদ্ধ নির্বাচনে অংশ নেবে এবং সেই ভিত্তিতেই সরকার গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

তারেক রহমান আরও বলেন, অনেকেই রাজনৈতিক সংস্কারের কথা বলছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো দলই আজ পর্যন্ত সংস্কারের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দেয়নি। অথচ বিএনপি দুই বছর আগে থেকেই যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের নিয়ে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এই ৩১ দফা শুধু বিএনপির নয়, বরং সকল জোটসঙ্গীর সম্মিলিত দফা, যা আগামীর রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

বৈঠকে আরও আলোচনায় উঠে আসে, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হলেও একটি অদৃশ্য শক্তি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তারেক রহমান। জোটের মুখপাত্র এবং এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “তারেক রহমান আমাদের স্পষ্ট করে বলেছেন, একসঙ্গে নির্বাচন ও সরকার গঠনের যে প্রতিশ্রুতি, সেখান থেকে বিএনপি একচুলও সরবে না।”

এই সভা থেকে স্পষ্ট হয়েছে, বিএনপি ও তাদের যুগপৎ আন্দোলনের অংশীদাররা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন এবং ভবিষ্যতের সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং তারা অতীতের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতেই বদ্ধপরিকর।