অন্তর্বর্তী সরকার ও সেনাবাহিনী কাদের নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনাকে ‘মব ভায়োলেন্স’ (গণহিংসা) আখ্যা দিয়ে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, যা দেশের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। রোববার রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নুরকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “নুরের ওপর হামলার খবর আমরা চীন থেকে শুনে উদ্বিগ্ন হয়েছি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর এমন ঘটনা আমরা কল্পনাও করিনি। এই হামলা শুধু দুঃখজনক নয়, এটা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা ফ্যাসিবাদবিরোধী নেতার ওপর এমন হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

এনসিপি প্রধান অভিযোগ করেন, হামলার আগে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নুরকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং এর ১০ মিনিটের মধ্যেই হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী যদি একটি রাজনৈতিক দলকে বাঁচাতে গিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী নেতাকে আক্রমণ করে, তাহলে সেটি কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।”

নাহিদ ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী প্রথমে দুঃখ প্রকাশ করলে বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা যেত। কিন্তু আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) বিবৃতি দিয়ে হামলাকে ‘মব ভায়োলেন্স’ বলেছে, যা ‘ন্যক্কারজনক’। তিনি দ্রুত বিবৃতি প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।

জাতীয় পার্টি প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, দলটি শুধু গত ১৬ বছর ধরে ‘দালালি’ করেনি, তারা ৯০-এর পরাজিত শক্তি। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হলে জনগণ তা প্রতিহত করবে এবং বাংলাদেশের মাটি থেকে ‘ফ্যাসিবাদীদের দোসরদের’ বিতাড়িত করা হবে।

এসময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, নুরের ওপর হামলা অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য একটি অশনিসংকেত। জনগণের ত্যাগের মাধ্যমে যে ফ্যাসিস্ট শাসন উৎখাত হয়েছে, তার বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেব না।

এসময় এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্য সচিব মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদীন শিশির, সংগঠক নাহিদ উদ্দিন তারেকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।