ঢাকা ০৫:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

    নিউরোসায়েন্স অধ্যাপকের সাক্ষ্য-আহতদের অধিকাংশেরই মাথার খুলি ছিল না

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৩:৫৪:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমান।

    বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ১৩তম সাক্ষী হিসেবে তিনি তার জবানবন্দিতে জানান, ওই সময়ে তার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া গুরুতর আহত ১৬৭ জনের বেশির ভাগের মাথার খুলি ছিল না। এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক আইজিপি মামুন ইতিমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। আজ তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

    জবানবন্দিতে মাহফুজুর রহমান জানান, গণ-অভ্যুত্থানের সময় তাদের হাসপাতালে ৫৭৫ জন গুলি ও পিলেটবিদ্ধ রোগীকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া, ১৬৭ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়, যাদের বেশির ভাগেরই মাথার খুলি ছিল না। তাদের মধ্যে চারজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল এবং ২৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়। তিনি বলেন, আহতদের প্রায় ৩৩টি অস্ত্রোপচার তিনি নিজে করেছেন।

    মাহফুজুর রহমান তার জবানবন্দিতে আরও বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই যখন রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল, তখন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) লোকেরা এসে নতুন গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের ভর্তি না করার জন্য তাকে চাপ দেয়। তারা তাকে ‘অতিউৎসুক না হতে’ এবং ‘বিপদে পড়তে পারেন’ বলে সতর্ক করে।

    ডিবি কর্মকর্তারা তাকে আরও জানান, ওপরের নির্দেশ রয়েছে যে, যাদের ভর্তি করা হয়েছে, তাদেরও ছেড়ে দেওয়া যাবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তখন কৌশল হিসেবে তিনি ভর্তি রেজিস্ট্রারে রোগীদের আঘাতের ধরন পরিবর্তন করে গুলিবিদ্ধের স্থলে ‘রোড অ্যাক্সিডেন্ট’ বা অন্যান্য কারণ লিপিবদ্ধ করে তাদের ভর্তি করেন।

    জবানবন্দির শেষে মাহফুজুর রহমান বলেন, উল্লিখিত মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান নির্দেশদাতা হলেন শেখ হাসিনা। তিনি তার নির্দেশ কার্যকরকারী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাত এবং যারা নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছেন, তাদের বিচার ও ফাঁসি দাবি করেন।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    নিউরোসায়েন্স অধ্যাপকের সাক্ষ্য-আহতদের অধিকাংশেরই মাথার খুলি ছিল না

    আপডেট সময় ০৩:৫৪:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

    জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমান।

    বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ১৩তম সাক্ষী হিসেবে তিনি তার জবানবন্দিতে জানান, ওই সময়ে তার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া গুরুতর আহত ১৬৭ জনের বেশির ভাগের মাথার খুলি ছিল না। এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সাবেক আইজিপি মামুন ইতিমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। আজ তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

    জবানবন্দিতে মাহফুজুর রহমান জানান, গণ-অভ্যুত্থানের সময় তাদের হাসপাতালে ৫৭৫ জন গুলি ও পিলেটবিদ্ধ রোগীকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া, ১৬৭ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়, যাদের বেশির ভাগেরই মাথার খুলি ছিল না। তাদের মধ্যে চারজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল এবং ২৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়। তিনি বলেন, আহতদের প্রায় ৩৩টি অস্ত্রোপচার তিনি নিজে করেছেন।

    মাহফুজুর রহমান তার জবানবন্দিতে আরও বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই যখন রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল, তখন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) লোকেরা এসে নতুন গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের ভর্তি না করার জন্য তাকে চাপ দেয়। তারা তাকে ‘অতিউৎসুক না হতে’ এবং ‘বিপদে পড়তে পারেন’ বলে সতর্ক করে।

    ডিবি কর্মকর্তারা তাকে আরও জানান, ওপরের নির্দেশ রয়েছে যে, যাদের ভর্তি করা হয়েছে, তাদেরও ছেড়ে দেওয়া যাবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তখন কৌশল হিসেবে তিনি ভর্তি রেজিস্ট্রারে রোগীদের আঘাতের ধরন পরিবর্তন করে গুলিবিদ্ধের স্থলে ‘রোড অ্যাক্সিডেন্ট’ বা অন্যান্য কারণ লিপিবদ্ধ করে তাদের ভর্তি করেন।

    জবানবন্দির শেষে মাহফুজুর রহমান বলেন, উল্লিখিত মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান নির্দেশদাতা হলেন শেখ হাসিনা। তিনি তার নির্দেশ কার্যকরকারী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাত এবং যারা নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছেন, তাদের বিচার ও ফাঁসি দাবি করেন।