ঢাকা ১১:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

    নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ নেই, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চাই-চরমোনাই পীর

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৭:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে

    দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এখনও উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম। আজ বুধবার রাজধানীর পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

    চরমোনাই পীর বলেন, “এখনো ভোটের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে গেলে প্রার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এই ঝুঁকিতে কেন নির্বাচনে যাব, সেই প্রশ্ন আপনাদের কাছে রাখছি।”

    সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন – পিআর) নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, “পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে কালোটাকার প্রভাব কমবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। কিন্তু বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় বলে এই দাবিকে ঘিরে শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দিচ্ছে।”

    ভবিষ্যতে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা ইসলামপ্রেমী ও দেশপ্রেমী দলগুলোর সঙ্গে জোট বা সমঝোতার বিষয়ে তিনি বলেন, “যারা দেশ ও ইসলামের পক্ষে, তাদের সঙ্গে ঐক্য গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।” ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল ঘোষণার আগে আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি, যা ছিল আমাদের জন্য বিব্রতকর। ঘোষণা দেওয়ার আগে আমাদের শুধু উপস্থিত রাখা হয়েছে। তারপরও প্রত্যাশিত সময়ে দলিলটি ঘোষিত হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।”

    তবে ঘোষণাপত্রে ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যেমন—১৯৪৭ সালের প্রেক্ষাপট, শাপলা চত্বরের ঘটনা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও আলেম-ওলামাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়গুলো উপেক্ষিত হয়েছে বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, “এতে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ পড়েছে। একই সঙ্গে ঘোষণাপত্রে ফ্যাসিবাদের দোসর রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তির কথাও উপেক্ষা করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ করে দিতে পারে।”

    প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ প্রসঙ্গে চরমোনাই পীর বলেন, “ভাষণটি আবেগময় এবং সুলিখিত হলেও বাস্তব সমস্যাগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কিছু সাফল্যের কথা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জনগণের উদ্বেগ কিংবা নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কোনো স্পষ্ট বার্তা ছিল না।”

    তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদ এখনো কোনো আইনি ভিত্তি পায়নি। এর রূপরেখাও নির্ধারিত নয়। সংস্কারের বিষয়টি ভবিষ্যতের সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত রাখা হয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করতে হবে। এই সনদের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।”

    সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম, মহাসচিব ইউনূস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ নেই, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চাই-চরমোনাই পীর

    আপডেট সময় ০৭:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

    দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এখনও উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম। আজ বুধবার রাজধানীর পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

    চরমোনাই পীর বলেন, “এখনো ভোটের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে গেলে প্রার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এই ঝুঁকিতে কেন নির্বাচনে যাব, সেই প্রশ্ন আপনাদের কাছে রাখছি।”

    সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন – পিআর) নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, “পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে কালোটাকার প্রভাব কমবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। কিন্তু বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় বলে এই দাবিকে ঘিরে শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দিচ্ছে।”

    ভবিষ্যতে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা ইসলামপ্রেমী ও দেশপ্রেমী দলগুলোর সঙ্গে জোট বা সমঝোতার বিষয়ে তিনি বলেন, “যারা দেশ ও ইসলামের পক্ষে, তাদের সঙ্গে ঐক্য গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।” ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল ঘোষণার আগে আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি, যা ছিল আমাদের জন্য বিব্রতকর। ঘোষণা দেওয়ার আগে আমাদের শুধু উপস্থিত রাখা হয়েছে। তারপরও প্রত্যাশিত সময়ে দলিলটি ঘোষিত হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।”

    তবে ঘোষণাপত্রে ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যেমন—১৯৪৭ সালের প্রেক্ষাপট, শাপলা চত্বরের ঘটনা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও আলেম-ওলামাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়গুলো উপেক্ষিত হয়েছে বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তার ভাষায়, “এতে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ পড়েছে। একই সঙ্গে ঘোষণাপত্রে ফ্যাসিবাদের দোসর রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তির কথাও উপেক্ষা করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ করে দিতে পারে।”

    প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ প্রসঙ্গে চরমোনাই পীর বলেন, “ভাষণটি আবেগময় এবং সুলিখিত হলেও বাস্তব সমস্যাগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কিছু সাফল্যের কথা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জনগণের উদ্বেগ কিংবা নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কোনো স্পষ্ট বার্তা ছিল না।”

    তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদ এখনো কোনো আইনি ভিত্তি পায়নি। এর রূপরেখাও নির্ধারিত নয়। সংস্কারের বিষয়টি ভবিষ্যতের সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত রাখা হয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করতে হবে। এই সনদের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।”

    সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম, মহাসচিব ইউনূস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।