ঢাকা ০৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    নেপালে বিক্ষোভে ভয়াবহ সহিংসতা নিহত ১৬, আহত শতাধিক

    ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
    • আপডেট সময় ০৭:১৯:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫১ বার পড়া হয়েছে

    নেপালে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভয়াবহ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুতে হাজার হাজার ছাত্র ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করেছে। এই সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

    নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার সম্প্রতি ফেসবুক, ইউটিউব, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধের ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা রাজধানী কাঠমান্ডুতে প্রথমে বাণেশ্বর এলাকায় সমাবেশ শুরু করেন এবং দ্রুত শহরের অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন। বিক্ষোভ দমন করতে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন করা হয়েছে।

    বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণরা অভিযোগ করেছেন, ভেতর থেকে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী জনতার আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। এক তরুণ বলেন, “আজ আমরা ইতোমধ্যে জয়ী হয়েছি।” ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী যেসব কৌশল ব্যবহার করেছে, তার ফলে বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

    স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, বানেশ্বর এলাকায় সংঘটিত সহিংসতায় সকালে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক ডা. দীপেন্দ্র পাণ্ডে জানান, হাসপাতালগুলোতে সাতজন নিহত অবস্থায় আনা হয়েছে এবং আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মাথা ও বুকে গুলির আঘাত রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালগুলোতে আরও ২০ জনের বেশি আহত চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

    বানেশ্বরের এভারেস্ট হাসপাতালের কর্মকর্তা অনিল অধিকারী নিশ্চিত করেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন এবং বর্তমানে কমপক্ষে ৫০ জন আহত রয়েছেন, যার মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। কাঠমান্ডু সিভিল হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। এছাড়া কেএমসি হাসপাতাল এবং ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালে একজন করে বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হয়নি।

    নেপালের এই বিক্ষোভে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ এবং সরকারি দুর্নীতির প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন ঘাতক সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    নেপালে বিক্ষোভে ভয়াবহ সহিংসতা নিহত ১৬, আহত শতাধিক

    আপডেট সময় ০৭:১৯:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    নেপালে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভয়াবহ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুতে হাজার হাজার ছাত্র ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করেছে। এই সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

    নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার সম্প্রতি ফেসবুক, ইউটিউব, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধের ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা রাজধানী কাঠমান্ডুতে প্রথমে বাণেশ্বর এলাকায় সমাবেশ শুরু করেন এবং দ্রুত শহরের অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন। বিক্ষোভ দমন করতে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন করা হয়েছে।

    বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণরা অভিযোগ করেছেন, ভেতর থেকে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী জনতার আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। এক তরুণ বলেন, “আজ আমরা ইতোমধ্যে জয়ী হয়েছি।” ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী যেসব কৌশল ব্যবহার করেছে, তার ফলে বহু মানুষ আহত হয়েছেন।

    স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, বানেশ্বর এলাকায় সংঘটিত সহিংসতায় সকালে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক ডা. দীপেন্দ্র পাণ্ডে জানান, হাসপাতালগুলোতে সাতজন নিহত অবস্থায় আনা হয়েছে এবং আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মাথা ও বুকে গুলির আঘাত রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালগুলোতে আরও ২০ জনের বেশি আহত চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

    বানেশ্বরের এভারেস্ট হাসপাতালের কর্মকর্তা অনিল অধিকারী নিশ্চিত করেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন এবং বর্তমানে কমপক্ষে ৫০ জন আহত রয়েছেন, যার মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। কাঠমান্ডু সিভিল হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। এছাড়া কেএমসি হাসপাতাল এবং ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালে একজন করে বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হয়নি।

    নেপালের এই বিক্ষোভে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ এবং সরকারি দুর্নীতির প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন ঘাতক সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত।