ঢাকা ০৬:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ট্রাম্পের চোখরাঙানি থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে তেলের সম্পর্ক মজবুত করছে পাকিস্তান

    ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
    • আপডেট সময় ০৬:১৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৪ বার পড়া হয়েছে

    রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্যের কারণে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্র শুল্কের বড় বোঝা চাপিয়েছে এবং সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপও অব্যাহত রেখেছে ওয়াশিংটন। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের মতোই জ্বালানি ও অর্থনৈতিক স্বার্থে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়াতে যাচ্ছে পাকিস্তান।

    চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, জ্বালানি, অবকাঠামো ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার করেন। একইসঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা। এ তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

    সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের বাণিজ্য হ্রাসের বিষয়টি উল্লেখ করে পুতিন বলেন, আমাদের দেখতে হবে কেন এই পতন ঘটেছে এবং তা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার জন্য শোক প্রকাশ করে আশা প্রকাশ করেন, শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে দেশটি দ্রুত দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে।

    জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করায় দুই দেশের বাণিজ্যে নতুন গতি এসেছে। তিনি বেলারুশ, রাশিয়া, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত বাণিজ্য করিডরের গুরুত্বও তুলে ধরেন।

    এর আগে গত বছর আস্তানায় বৈঠকের পর কৃষি, লোহা-ইস্পাত, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে কয়েকটি চুক্তি হয় দুই দেশের মধ্যে। এ বছর জুলাইয়ে করাচির পাকিস্তান স্টিল মিলস পুনরুজ্জীবিত ও সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ ও মস্কো। পুতিনের আমন্ত্রণে মস্কো সফরের আগ্রহও প্রকাশ করেন শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, বহু বছর হয়ে গেছে আমি রাশিয়া যাইনি, এবার গেলে পুরোনো দিনের স্মৃতি ফিরে আসবে।

    ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শেহবাজ শরিফ বলেন, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে সম্মান করে, তবে ইসলামাবাদও মস্কোর সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়তে চায়।

    পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, জ্বালানি তেল আমদানি ও বহুমুখী সহযোগিতার প্রয়োজনেই রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, রাশিয়ার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা মানে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পাশাপাশি নতুন কৌশলগত অবস্থান তৈরি করা, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চিন্তার কারণ হতে পারে।

    পুতিন পাকিস্তানকে ‘ঐতিহ্যবাহী অংশীদার’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘ ও পার্লামেন্টারি কূটনীতিতেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা বলেন। বৈঠকে দুই নেতা সম্মত হন, বৈশ্বিক সংকট ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি ও পরিবহন খাতে সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ বাড়ানো হবে। শেহবাজ শরিফের ভাষায়, রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের এই অংশীদারিত্ব আঞ্চলিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ট্রাম্পের চোখরাঙানি থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে তেলের সম্পর্ক মজবুত করছে পাকিস্তান

    আপডেট সময় ০৬:১৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্যের কারণে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্র শুল্কের বড় বোঝা চাপিয়েছে এবং সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপও অব্যাহত রেখেছে ওয়াশিংটন। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের মতোই জ্বালানি ও অর্থনৈতিক স্বার্থে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়াতে যাচ্ছে পাকিস্তান।

    চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, জ্বালানি, অবকাঠামো ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার করেন। একইসঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা। এ তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

    সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের বাণিজ্য হ্রাসের বিষয়টি উল্লেখ করে পুতিন বলেন, আমাদের দেখতে হবে কেন এই পতন ঘটেছে এবং তা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার জন্য শোক প্রকাশ করে আশা প্রকাশ করেন, শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে দেশটি দ্রুত দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবে।

    জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করায় দুই দেশের বাণিজ্যে নতুন গতি এসেছে। তিনি বেলারুশ, রাশিয়া, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত বাণিজ্য করিডরের গুরুত্বও তুলে ধরেন।

    এর আগে গত বছর আস্তানায় বৈঠকের পর কৃষি, লোহা-ইস্পাত, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে কয়েকটি চুক্তি হয় দুই দেশের মধ্যে। এ বছর জুলাইয়ে করাচির পাকিস্তান স্টিল মিলস পুনরুজ্জীবিত ও সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ ও মস্কো। পুতিনের আমন্ত্রণে মস্কো সফরের আগ্রহও প্রকাশ করেন শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, বহু বছর হয়ে গেছে আমি রাশিয়া যাইনি, এবার গেলে পুরোনো দিনের স্মৃতি ফিরে আসবে।

    ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শেহবাজ শরিফ বলেন, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে সম্মান করে, তবে ইসলামাবাদও মস্কোর সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়তে চায়।

    পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, জ্বালানি তেল আমদানি ও বহুমুখী সহযোগিতার প্রয়োজনেই রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, রাশিয়ার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা মানে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পাশাপাশি নতুন কৌশলগত অবস্থান তৈরি করা, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চিন্তার কারণ হতে পারে।

    পুতিন পাকিস্তানকে ‘ঐতিহ্যবাহী অংশীদার’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘ ও পার্লামেন্টারি কূটনীতিতেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা বলেন। বৈঠকে দুই নেতা সম্মত হন, বৈশ্বিক সংকট ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি ও পরিবহন খাতে সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ বাড়ানো হবে। শেহবাজ শরিফের ভাষায়, রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের এই অংশীদারিত্ব আঞ্চলিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।