বাংলাদেশি-আমেরিকান কর্নেল শরিফুল এম খান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার ফোর্স-এ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। গত ১৩ জুন ওয়াশিংটন ডিসির পেন্টাগনে এক অনুষ্ঠানে এই পদোন্নতি ঘোষণা করা হয়, যা তাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে প্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান হিসেবে এই পদে উন্নীত হওয়ার বিরল সম্মান এনে দিয়েছে।

এই ঐতিহাসিক অর্জনের জন্য ঢাকার মার্কিন দূতাবাস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফুল এম খানকে অভিনন্দন জানিয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়, “ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফুল এম খানকে অভিনন্দন, যিনি আমেরিকান শ্রেষ্ঠত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ও বাংলাদেশি-আমেরিকান সম্প্রদায়ের জন্য এক পথিকৃৎ। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে এ পদে উন্নীত হওয়া প্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান মাতৃভূমি রক্ষায় ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোরদারে তার নিষ্ঠা ও সেবার স্বাক্ষর।”

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত এম ওসমান সিদ্দিক ১৯ আগস্ট পেন্টাগনে অনুষ্ঠিত এই পদোন্নতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “বাংলাদেশের সন্তান শরিফুল খান আজ ইতিহাস তৈরি করলেন। মার্কিন সেনাবাহিনীতে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি-আমেরিকান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হলেন।”

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খানের শপথ পাঠ করান যুক্তরাষ্ট্র স্পেস ফোর্সের ভাইস চিফ অব স্পেস অপারেশনস জেনারেল শন ব্রাটন। বর্তমানে তিনি পেন্টাগনে ‘গোল্ডেন ডোম ফর আমেরিকা’র ডিরেক্টর অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই পদে তিনি কৌশল, নীতি, পরিকল্পনা ও ক্রস-ফাংশনাল কার্যক্রম সমন্বয় করার পাশাপাশি শিল্প, অ্যাকাডেমিয়া, ন্যাশনাল ল্যাব ও সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উন্নয়নে কাজ করছেন।

শরিফুল খান ১৯৯৭ সালে ইউনাইটেড স্টেটস এয়ার ফোর্স একাডেমি থেকে পলিটিক্যাল সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ওয়েবস্টার ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স কলেজ, স্কুল অব অ্যাডভান্সড এয়ার অ্যান্ড স্পেস স্টাডিজ, নেভাল ওয়ার কলেজ, এমআইটি এবং জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

তার কর্মজীবনে তিনি মহাকাশ নিয়ন্ত্রণ, স্যাটেলাইট অপারেশন, স্পেস সিস্টেম এবং ন্যাশনাল রিকনাইসেন্স অফিসে স্যাটেলাইট অপারেটর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০০১ সালে কুয়েতের আলি আল সালেম বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন হন এবং ২০০৭ সালে অপারেশন সাইলেন্ট সেনট্রির সময় ডিপ্লয়মেন্ট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্কোয়াড্রন এবং উইং উভয় পর্যায়ে কমান্ড করেছেন এবং কলোরাডোর শ্রিভার স্পেস ফোর্স বেসে ৩১০তম স্পেস উইং-এর কমান্ডার হিসেবে প্রায় দেড় হাজার সামরিক সদস্য ও ১৯টি ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও, তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি বিভাগেও দায়িত্ব পালন করেছেন।