প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ – প্রধান উপদেষ্টা

- আপডেট সময় ০২:০০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিনের শূন্যপদ পূরণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়াসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বৈঠকের পরদিন মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর সার্বিক শিক্ষা মান এবং কোন কোন বিদ্যালয় এগিয়ে আছে তা নিয়ে জানতে চান। জবাবে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানান, দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনেক অর্থ ব্যয় করা হলেও শিক্ষার গুণগত মানে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। তিনি বলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর পারফরম্যান্স মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটি র্যাংকিং তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং যেসব স্কুল পিছিয়ে আছে, সেগুলোর জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।
বিধান রঞ্জন আরও জানান, শিক্ষা মানে
প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেসব স্কুল ভালো করছে, সেগুলোর নেতৃত্বে দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। বর্তমানে দেশের প্রায় ৩২ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এই সংকট নিরসনে পদায়ন ও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
এই প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করে আসা অভিজ্ঞদের পাশাপাশি তরুণ শিক্ষকদেরও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কয়েকটি শ্রেণি (ক্যাটাগরি) নির্ধারণ করে যোগ্যদের নির্বাচন করার পরামর্শ দেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) এর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ওপর জোর দেন। একই সঙ্গে শিক্ষকদের বদলি নীতিমালার সংস্কার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও দেন তিনি।
তিনি বলেন, শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে অনেকেই তদবির করে সুবিধাজনক স্থানে যেতে চান। এই অনিয়ম রোধে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে যাতে বদলি শুধুমাত্র নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়। বৈঠকে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানতে চান, স্কুলগুলোর অবকাঠামো নারীবান্ধব কি না। ভবিষ্যতে স্কুল নির্মাণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে যেন একজন নারী স্থপতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে দেশের প্রতিটি স্কুলে ইন্টারনেট সংযোগ ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন অধ্যাপক ইউনূস। প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে এই নির্দেশনাগুলো আগামী দিনের শিক্ষা কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।