গাজায় চলমান যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না সৌদি আরব—এমন সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল ইস্যুতে এতটা খোলাখুলি ও কঠোর অবস্থান রিয়াদ এর আগে কখনো নেয়নি।

সোমবার (২৮ জুলাই) নিউইয়র্কে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারোর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই অবস্থান তুলে ধরেন প্রিন্স ফয়সাল। এর আগে তিনি সৌদি আরব ও ফ্রান্সের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান’ শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, যদি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়, তাহলে কি সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে? জবাবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরবের স্বীকৃতি সরাসরি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তিনি বলেন, “গাজায় যখন গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, তখন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রশ্নই ওঠে না।”

ফয়সাল আরও বলেন, “আমরা আশা করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি নতুন গতি সৃষ্টি হবে। সেটিই হবে ভবিষ্যতে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ আলোচনা শুরু করার ভিত্তি।” গাজায় মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “প্রথমে যুদ্ধ বন্ধ হতে হবে, মানুষের দুর্ভোগ কমাতে হবে। এরপর আলোচনা হতে পারে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে। আর সেটি বাস্তবায়িত হলে তবেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি বিবেচনায় আসবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই বক্তব্য শুধু সৌদি আরবের কূটনৈতিক অবস্থানই নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলকে ঘিরে উত্তেজনা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি নির্ধারক বার্তা বহন করছে। রিয়াদ এভাবে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল যে, ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত স্বীকৃতি ও সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।