ঢাকা ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

    ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০১:৪৭:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৪ বার পড়া হয়েছে

    প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ফের সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, নির্বাচন বিলম্বে সরকারের একটি অংশ এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সুস্পষ্ট অনীহা কাজ করছে, যা গণতন্ত্রের পথে বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করছে।

    দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরকারকে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে তিন মাসব্যাপী কর্মসূচির একটি খসড়া রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে রোড মার্চ, বিভাগীয় সমাবেশ এবং আসনভিত্তিক পদযাত্রার মতো বিভিন্ন কর্মসূচির প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    গত বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের সাংগঠনিক বৈঠকে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করেন নেতারা। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নেতাদের কাছ থেকে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জনগণের ভাবনা এবং বিএনপির করণীয় সম্পর্কে মতামত নেন।

    বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল ও মহলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে অনীহা স্পষ্ট। এটা গণতন্ত্রের পথে একটি ষড়যন্ত্র। জনগণ যখন এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে, বিএনপি তাদের পাশে থাকবে।”

    বৈঠকে নেতারা জানান, এখন প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা আগেভাগেই মাঠে কাজ শুরু করেছেন। এতে অনেক আসনে দল বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এই বিভক্তি নিরসনে এবং দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের একই প্ল্যাটফর্মে থেকে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত এ ঐক্য ধরে রাখতে হবে বলেও মত দেওয়া হয়।

    এ ছাড়া যারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও উঠে আসে বৈঠকে। বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং সক্রিয় মতামত দেন।

    দলীয় একটি সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত কর্মসূচিগুলো চূড়ান্ত করতে শিগগিরই আবার বৈঠকে বসবে সাংগঠনিক টিম। সেখান থেকে প্রস্তাবগুলো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সামনে উপস্থাপন করা হবে। পরে তা দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম—জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হবে।

    দলের অভ্যন্তরে এখন দৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস কাজ করছে যে, জনগণের মধ্যে আর বিভ্রান্তি নেই—তারা বুঝতে পারছে একটি অনির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ। তাই রাজনৈতিকভাবে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী দাবিতে মাঠে নামাই এখন বিএনপির জন্য সবচেয়ে কার্যকর কৌশল বলে মনে করছেন নেতারা।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

    আপডেট সময় ০১:৪৭:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

    প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ফের সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, নির্বাচন বিলম্বে সরকারের একটি অংশ এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সুস্পষ্ট অনীহা কাজ করছে, যা গণতন্ত্রের পথে বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করছে।

    দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরকারকে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে তিন মাসব্যাপী কর্মসূচির একটি খসড়া রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে রোড মার্চ, বিভাগীয় সমাবেশ এবং আসনভিত্তিক পদযাত্রার মতো বিভিন্ন কর্মসূচির প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

    গত বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের সাংগঠনিক বৈঠকে এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করেন নেতারা। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নেতাদের কাছ থেকে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জনগণের ভাবনা এবং বিএনপির করণীয় সম্পর্কে মতামত নেন।

    বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল ও মহলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে অনীহা স্পষ্ট। এটা গণতন্ত্রের পথে একটি ষড়যন্ত্র। জনগণ যখন এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে, বিএনপি তাদের পাশে থাকবে।”

    বৈঠকে নেতারা জানান, এখন প্রতিটি আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা আগেভাগেই মাঠে কাজ শুরু করেছেন। এতে অনেক আসনে দল বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এই বিভক্তি নিরসনে এবং দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের একই প্ল্যাটফর্মে থেকে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত এ ঐক্য ধরে রাখতে হবে বলেও মত দেওয়া হয়।

    এ ছাড়া যারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও উঠে আসে বৈঠকে। বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং সক্রিয় মতামত দেন।

    দলীয় একটি সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত কর্মসূচিগুলো চূড়ান্ত করতে শিগগিরই আবার বৈঠকে বসবে সাংগঠনিক টিম। সেখান থেকে প্রস্তাবগুলো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সামনে উপস্থাপন করা হবে। পরে তা দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম—জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হবে।

    দলের অভ্যন্তরে এখন দৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস কাজ করছে যে, জনগণের মধ্যে আর বিভ্রান্তি নেই—তারা বুঝতে পারছে একটি অনির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ। তাই রাজনৈতিকভাবে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী দাবিতে মাঠে নামাই এখন বিএনপির জন্য সবচেয়ে কার্যকর কৌশল বলে মনে করছেন নেতারা।