চলমান উত্তেজনায় ভারতের ১৫ টি শহরে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তান গত ৭ থেকে ৮ মে রাতের অন্ধকারে তাদের অন্তত ১৫টি শহরের সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর চেষ্টা করেছে।

তবে নয়াদিল্লি দাবি করেছে, তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী এই হামলাগুলো সফলভাবে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ১৫টি শহর। এই শহরগুলোর অধিকাংশই গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ও কৌশলগত অবকাঠামো সমৃদ্ধ।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক চিহ্নিত পাকিস্তানের হামলার লক্ষ্যস্থল শহরগুলো হলো:

• শ্রীনগর (জম্মু ও কাশ্মীর)
• আওয়ান্তিপুরা (জম্মু ও কাশ্মীর)
• উধমপুর (জম্মু ও কাশ্মীর)
• জম্মু (জম্মু ও কাশ্মীর)
• পাঠানকোট (পাঞ্জাব)
• অমৃতসর (পাঞ্জাব)
• লুধিয়ানা (পাঞ্জাব)
• জালন্ধর (পাঞ্জাব)
• চণ্ডীগড় (পাঞ্জাব)
• ভাতিন্ডা (পাঞ্জাব)
• ভুজ (গুজরাট)
• নাল (রাজস্থান)
• ফালোদি (রাজস্থান)
• উত্তারলাই
• কাপুরতোলা

ভারত আরও জানিয়েছে, এই হামলার মোকাবিলায় তারা অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, বিশেষ করে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে। হামলার ধ্বংসাবশেষ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

ভারতের পক্ষ থেকে এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ‘প্রতিশোধমূলক পাল্টা আক্রমণ’ চালানোর দাবি করা হয়েছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তাদের বাহিনী পাকিস্তানের লাহোরসহ একাধিক শহরের সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এই আক্রমণে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে রাডার ঘাঁটিগুলোকে ‘হারপি’ ও ‘হারোপ’ ড্রোনের মাধ্যমে টার্গেট করা হয়েছে।

যদিও পাকিস্তান ভারতীয় হামলার কথা স্বীকার করেছে, তবে তাদের তরফ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, লাহোরের কাছে ভারতীয় ড্রোন হামলায় তাদের চারজন সেনা আহত হয়েছেন এবং সিন্ধু প্রদেশে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলো উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে আসার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘও বিশেষভাবে দুই দেশকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে। এই ঘটনার জেরেই সাম্প্রতিক এই পাল্টাপাল্টি হামলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।