ঢাকা ০২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

    ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নাজুক, যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখছে-মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১২:৩৪:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে

    যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের দিকে প্রতিদিন নজর রাখছে। রোববার (১৭ আগস্ট) এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন এবং যেকোনো মুহূর্তে তা ভেঙে যেতে পারে। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে বড় জটিলতা হলো সেটি বজায় রাখা।

    মার্কো রুবিও আরও দাবি করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই প্রতিবেশী পরাশক্তির মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাত এড়াতে ভূমিকা রেখেছেন। ট্রাম্প নিজেও একাধিকবার দাবি করেছেন যে তার মধ্যস্থতায় দিল্লি ও ইসলামাবাদ গত মে মাসে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। তিনি বলেন, “সেটি হয়তো পারমাণবিক সংঘাতে গড়াতো, আমি সেটি ঠেকিয়েছি।”

    তবে এই দাবির সঙ্গে ভারত একমত নয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে বলেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর থামানোর জন্য কেউ চাপ দেয়নি।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করও জানান, কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি আসেনি। অন্যদিকে, পাকিস্তান শুরু থেকেই ট্রাম্পকে এর কৃতিত্ব দিয়ে আসছে এবং সেখানে এ প্রচারণা চলছে যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কারণেই সীমান্তে শান্তি ফিরেছে।

    এদিকে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির দু’বার ওয়াশিংটন সফর করেছেন এবং মার্কিন প্রশাসন ইসলামাবাদকে পাশে টানতে তেল সরবরাহের চুক্তিও ঘোষণা করেছে। এই দ্বৈত চিত্র থেকেই ভারতের গুরুত্ব বাড়ছে। কারণ ওয়াশিংটনের কাছে ভারত এখন শুধু পাকিস্তান প্রসঙ্গে নয়, বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের কারণেও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দিল্লি মস্কো থেকে তেল কিনছে এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। তাই মার্কিন কূটনীতি ভারতকে কাছে টানতে এবং পাকিস্তানকেও আংশিকভাবে সন্তুষ্ট রাখতে চাইছে।

    সব মিলিয়ে, মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এখনও নাজুক এবং আমেরিকা প্রতিদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে ভারতের অবস্থান একটাই—যুদ্ধবিরতি দিল্লির নিজস্ব সিদ্ধান্ত, বাইরের কোনো হস্তক্ষেপে নয়।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নাজুক, যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখছে-মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

    আপডেট সময় ১২:৩৪:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

    যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের দিকে প্রতিদিন নজর রাখছে। রোববার (১৭ আগস্ট) এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখা খুবই কঠিন এবং যেকোনো মুহূর্তে তা ভেঙে যেতে পারে। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে বড় জটিলতা হলো সেটি বজায় রাখা।

    মার্কো রুবিও আরও দাবি করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই প্রতিবেশী পরাশক্তির মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাত এড়াতে ভূমিকা রেখেছেন। ট্রাম্প নিজেও একাধিকবার দাবি করেছেন যে তার মধ্যস্থতায় দিল্লি ও ইসলামাবাদ গত মে মাসে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। তিনি বলেন, “সেটি হয়তো পারমাণবিক সংঘাতে গড়াতো, আমি সেটি ঠেকিয়েছি।”

    তবে এই দাবির সঙ্গে ভারত একমত নয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে বলেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর থামানোর জন্য কেউ চাপ দেয়নি।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করও জানান, কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি আসেনি। অন্যদিকে, পাকিস্তান শুরু থেকেই ট্রাম্পকে এর কৃতিত্ব দিয়ে আসছে এবং সেখানে এ প্রচারণা চলছে যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কারণেই সীমান্তে শান্তি ফিরেছে।

    এদিকে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির দু’বার ওয়াশিংটন সফর করেছেন এবং মার্কিন প্রশাসন ইসলামাবাদকে পাশে টানতে তেল সরবরাহের চুক্তিও ঘোষণা করেছে। এই দ্বৈত চিত্র থেকেই ভারতের গুরুত্ব বাড়ছে। কারণ ওয়াশিংটনের কাছে ভারত এখন শুধু পাকিস্তান প্রসঙ্গে নয়, বরং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের কারণেও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দিল্লি মস্কো থেকে তেল কিনছে এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। তাই মার্কিন কূটনীতি ভারতকে কাছে টানতে এবং পাকিস্তানকেও আংশিকভাবে সন্তুষ্ট রাখতে চাইছে।

    সব মিলিয়ে, মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এখনও নাজুক এবং আমেরিকা প্রতিদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে ভারতের অবস্থান একটাই—যুদ্ধবিরতি দিল্লির নিজস্ব সিদ্ধান্ত, বাইরের কোনো হস্তক্ষেপে নয়।