ঢাকা ১১:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

    মাইলস্টোন কলেজে ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার কারণ জানালেন প্রেস সচিব

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০২:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
    • / ২৬১ বার পড়া হয়েছে

    মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনের সময় ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

    বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, মঙ্গলবার তাঁরা দীর্ঘ সময় কলেজে অবস্থান করেছিলেন সংকট নিরসনে শান্তিপূর্ণ পথ অনুসরণ করতেই। তাঁর ভাষায়, “আমরা চাইলে আগেই চলে আসতে পারতাম, কিন্তু উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তারা বলেছিলেন, যতক্ষণ দরকার, ততক্ষণ থাকবেন। আমরা কেবল তখনই স্কুল ত্যাগ করেছি, যখন সেটি প্রাসঙ্গিক ছিল।”

    শফিকুল আলম জানান, মাইলস্টোন কলেজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টা। এই কন্ট্রোল রুম প্রতিদিন নিহত ও আহতদের সংখ্যা হালনাগাদ করবে এবং কলেজের রেজিস্ট্রার বইয়ের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও জানান, উপদেষ্টারা পরামর্শ দিয়েছেন এই প্রক্রিয়ায় কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। কন্ট্রোল রুমটি বুধবার থেকেই চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

    মঙ্গলবারের দিনটিকে ‘শোক ও ক্ষোভে ভারাক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। তিনি লেখেন, “আমরা মাইলস্টোন কলেজ পরিদর্শন করেছি, শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছি এবং সেইসব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা এখনো এই মর্মান্তিক ঘটনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি। অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের চোখে দেখা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য বিভ্রান্তির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।”

    নিজের সাংবাদিকতা জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শফিকুল আলম লেখেন, “২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমি অসংখ্য বড় দুর্ঘটনার সংবাদ কভার করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব। সাধারণত দুর্ঘটনার পরপরই পরিবারগুলো প্রিয়জনকে নিখোঁজ হিসেবে জানায়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ও প্রশাসনিক সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিখোঁজদের অবস্থান শনাক্ত করা যায়।”

    তিনি বলেন, মাইলস্টোন কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে প্রতিদিনের উপস্থিতি তালিকা (অ্যাটেনডেন্স রেকর্ড) বিশ্লেষণ করে এখনো যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের শনাক্ত করতে পারবে।

    স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে আহতদের চিকিৎসা ও অবস্থা পর্যবেক্ষণের কাজও চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব। তাঁর ভাষায়, “আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সরকারের পক্ষ থেকে প্রাণহানির সংখ্যা গোপন বা কম দেখানোর কোনো কারণ নেই।”

    প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিহতদের স্মরণ করে লেখেন, “যারা এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি এবং তারা সবাই শহীদ। আসুন, ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা এড়াতে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করি। সরকার জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং আকাশপথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

    নিউজটি শেয়ার করুন

    মাইলস্টোন কলেজে ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার কারণ জানালেন প্রেস সচিব

    আপডেট সময় ০২:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

    মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনের সময় ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

    বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, মঙ্গলবার তাঁরা দীর্ঘ সময় কলেজে অবস্থান করেছিলেন সংকট নিরসনে শান্তিপূর্ণ পথ অনুসরণ করতেই। তাঁর ভাষায়, “আমরা চাইলে আগেই চলে আসতে পারতাম, কিন্তু উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তারা বলেছিলেন, যতক্ষণ দরকার, ততক্ষণ থাকবেন। আমরা কেবল তখনই স্কুল ত্যাগ করেছি, যখন সেটি প্রাসঙ্গিক ছিল।”

    শফিকুল আলম জানান, মাইলস্টোন কলেজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টা। এই কন্ট্রোল রুম প্রতিদিন নিহত ও আহতদের সংখ্যা হালনাগাদ করবে এবং কলেজের রেজিস্ট্রার বইয়ের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও জানান, উপদেষ্টারা পরামর্শ দিয়েছেন এই প্রক্রিয়ায় কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। কন্ট্রোল রুমটি বুধবার থেকেই চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

    মঙ্গলবারের দিনটিকে ‘শোক ও ক্ষোভে ভারাক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। তিনি লেখেন, “আমরা মাইলস্টোন কলেজ পরিদর্শন করেছি, শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছি এবং সেইসব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা এখনো এই মর্মান্তিক ঘটনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি। অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের চোখে দেখা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য বিভ্রান্তির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।”

    নিজের সাংবাদিকতা জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শফিকুল আলম লেখেন, “২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমি অসংখ্য বড় দুর্ঘটনার সংবাদ কভার করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব। সাধারণত দুর্ঘটনার পরপরই পরিবারগুলো প্রিয়জনকে নিখোঁজ হিসেবে জানায়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ও প্রশাসনিক সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিখোঁজদের অবস্থান শনাক্ত করা যায়।”

    তিনি বলেন, মাইলস্টোন কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে প্রতিদিনের উপস্থিতি তালিকা (অ্যাটেনডেন্স রেকর্ড) বিশ্লেষণ করে এখনো যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের শনাক্ত করতে পারবে।

    স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে আহতদের চিকিৎসা ও অবস্থা পর্যবেক্ষণের কাজও চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব। তাঁর ভাষায়, “আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সরকারের পক্ষ থেকে প্রাণহানির সংখ্যা গোপন বা কম দেখানোর কোনো কারণ নেই।”

    প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিহতদের স্মরণ করে লেখেন, “যারা এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি এবং তারা সবাই শহীদ। আসুন, ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা এড়াতে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করি। সরকার জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং আকাশপথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”