মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা

- আপডেট সময় ০৩:১৪:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
- / ২৭৪ বার পড়া হয়েছে
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দেশটির দীর্ঘমেয়াদি জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে এবং একইসঙ্গে চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। তবে নির্দিষ্ট তারিখ এখনো জানানো হয়নি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সামরিক বাহিনী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। এই পদক্ষেপ দেশজুড়ে এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের সূচনা করে, যার ফলে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
জরুরি অবস্থার আওতায় জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং আইনসভা, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি নির্বাচনকে এই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন সাংবাদিকদের পাঠানো এক ভয়েস বার্তায় জানান, “একাধিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পথে দেশকে এগিয়ে নিতে আজ জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে।” নাইপিদোতে জান্তা পরিচালিত রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক কাউন্সিলের এক অনুষ্ঠানে মিন অং হ্লাইং বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে প্রথম অধ্যায় অতিক্রম করেছি। এখন আমরা দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করছি।” তিনি জানান, নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে এবং সব যোগ্য নাগরিক যেন ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে তারা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যেই ঘোষিত নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের মতে, এই নির্বাচন প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র ফেরানোর কোনো প্রচেষ্টা নয়, বরং জান্তা শাসনের বৈধতা প্রতিষ্ঠার একটি ছলচাতুরী।
জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ এর আগেই আসন্ন নির্বাচনকে ‘প্রতারণামূলক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি কেবল জান্তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার একটি প্রচেষ্টা। এদিকে জান্তা এখনো নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা না করলেও রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের প্রশিক্ষণও চলছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও মিন অং হ্লাইং কোনো না কোনোভাবে রাষ্ট্রপতি অথবা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে ক্ষমতা ধরে রাখবেন, ফলে তার শাসন প্রকারান্তরে অব্যাহত থাকবে।