ঢাকা ০৩:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

    মুরাদনগরে সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট শুক্কুর আলী

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০১:৫১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৮ বার পড়া হয়েছে

    কুমিল্লার মুরাদনগরে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন ছয়জন গণমাধ্যমকর্মী। বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলার আল্লাহু চত্ত্বরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় হামলাকারীরা একটি মোবাইল ফোন ও তিনটি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হিসেবে পরিচিত শুক্কুর আলী।

    পুলিশ ও ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বরাতে জানা গেছে, শুক্কুর আলী উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মফিজ মিয়ার ছেলে এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে চিহ্নিত করেছে।

    হামলায় আহত সাংবাদিকরা হলেন: দৈনিক খোলা কাগজের কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি শাহ ইমরান, স্টার নিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফ, বার্তা২৪-এর প্রতিনিধি মঈন নাসের খান রাফি, দৈনিক পূর্বাশার প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান মুন্না, এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি মাহফুজ আনোয়ার সৌরভ এবং এসএ টিভির ক্যামেরাম্যান মো. বাপ্পি।

    জানা গেছে, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং তার বাবা প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচারের প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি আল্লাহু চত্ত্বরে পৌঁছালে প্রতিপক্ষের একটি দল ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ঠিক সেই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনেরত সাংবাদিকদের ওপরও সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।

    আহত সাংবাদিক শাহ ইমরান অভিযোগ করে বলেন, “আমরা কেবল আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম, অথচ আমাদের টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। হামলার নেতৃত্বে ছিলো আওয়ামী লীগপন্থী সন্ত্রাসী শুক্কুর আলী।”

    আরেক আহত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মুন্না বলেন, “আমরা হামলার ছবি ও ভিডিও ধারণ করছিলাম বলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।” এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ওমর ফারুকী তাপস। তিনি বলেন, “পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা কাপুরুষতা। সাংবাদিকরা কোনো পক্ষ নয়, তাদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

    একই সঙ্গে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এনামুল হক ফারুক এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আহ্বান জানাই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।”

    মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, “হামলার ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। হামলাকারীদের ছবি এবং ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে। অভিযুক্ত শুক্কুর আলীর অতীত ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।”

    ঘটনার পর পুরো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলার ঘটনার তদন্তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের ওপর এই বর্বর হামলার ঘটনায় পেশাগত মহলে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    মুরাদনগরে সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট শুক্কুর আলী

    আপডেট সময় ০১:৫১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

    কুমিল্লার মুরাদনগরে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন ছয়জন গণমাধ্যমকর্মী। বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলার আল্লাহু চত্ত্বরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় হামলাকারীরা একটি মোবাইল ফোন ও তিনটি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হিসেবে পরিচিত শুক্কুর আলী।

    পুলিশ ও ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বরাতে জানা গেছে, শুক্কুর আলী উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মফিজ মিয়ার ছেলে এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে চিহ্নিত করেছে।

    হামলায় আহত সাংবাদিকরা হলেন: দৈনিক খোলা কাগজের কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি শাহ ইমরান, স্টার নিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফ, বার্তা২৪-এর প্রতিনিধি মঈন নাসের খান রাফি, দৈনিক পূর্বাশার প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান মুন্না, এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি মাহফুজ আনোয়ার সৌরভ এবং এসএ টিভির ক্যামেরাম্যান মো. বাপ্পি।

    জানা গেছে, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং তার বাবা প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচারের প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি আল্লাহু চত্ত্বরে পৌঁছালে প্রতিপক্ষের একটি দল ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। ঠিক সেই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনেরত সাংবাদিকদের ওপরও সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।

    আহত সাংবাদিক শাহ ইমরান অভিযোগ করে বলেন, “আমরা কেবল আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম, অথচ আমাদের টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। হামলার নেতৃত্বে ছিলো আওয়ামী লীগপন্থী সন্ত্রাসী শুক্কুর আলী।”

    আরেক আহত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মুন্না বলেন, “আমরা হামলার ছবি ও ভিডিও ধারণ করছিলাম বলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।” এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ওমর ফারুকী তাপস। তিনি বলেন, “পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা কাপুরুষতা। সাংবাদিকরা কোনো পক্ষ নয়, তাদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

    একই সঙ্গে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এনামুল হক ফারুক এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আহ্বান জানাই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।”

    মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, “হামলার ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। হামলাকারীদের ছবি এবং ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে। অভিযুক্ত শুক্কুর আলীর অতীত ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।”

    ঘটনার পর পুরো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলার ঘটনার তদন্তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের ওপর এই বর্বর হামলার ঘটনায় পেশাগত মহলে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।