ঢাকা ০৩:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

    মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেটকারে মৃত দু’জনের পরিচয় মিলেছে

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০১:১২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    রাজধানীর মৌচাকে অবস্থিত ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পার্কিংয়ে একটি প্রাইভেটকার থেকে উদ্ধার হওয়া দুজনের পরিচয় জানা গেছে। নিহত দুজন নোয়াখালীর চাটখিল থেকে ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন চিকিৎসাধীন এক শিশুকে আনতে। গাড়িটির মালিক, যিনি তাদের সঙ্গে নোয়াখালী থেকে গিয়েছিলেন, পরে বাসে করে ফিরে আসেন। গাড়িটির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

    নিহত দুজন হলেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ মিজান এবং একই উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের জাকির হোসেন। এর মধ্যে জাকির হোসেন ছিলেন গাড়িটির চালক। গাড়ির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ বলেন, জাকির ও মিজান দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তিনি তার স্ত্রীর বড় ভাইকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে শনিবার রাতে ঢাকা যান।

    এ সময় জাকির এবং তার বন্ধু মিজানও গাড়িতে ওঠেন। মিজান প্রতিবেশী এক শিশুকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীর বড় ভাইকে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়ার পর রোববার ভোরে তারা গাড়ি নিয়ে মালিবাগ এলাকায় পৌঁছান। এরপর জাকির তাকে মালিবাগ থেকে নোয়াখালীর একটি বাসে তুলে দেন।

    জোবায়ের আল মাহমুদ জানান, বিদায় নেওয়ার সময় জাকির তাকে বলেছিলেন যে, বেলা ১১টার দিকে রোগীকে ছাড়পত্র দেবে এবং ততক্ষণ তারা গাড়িতেই ঘুমাবেন। এরপর জোবায়ের জাকিরকে ফোন করে পাননি। রাত ৮টা পর্যন্ত একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

    ফোন না ধরায় জোবায়ের জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে গাড়িটির অবস্থান দেখেন। তিনি বলেন, “যতবারই ট্র্যাক করছি, দেখি গাড়ি হাসপাতালের পার্কিংয়ে। উপায় না দেখে পরদিন জাকিরের নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ফোন দিই। তিনিও ফোন ধরেননি। এরপর যাদের রোগী আনতে গেছেন, তারাও বেশ কয়েকবার ফোন দেন। কিন্তু মিজান-জাকিরের সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।”

    এর মধ্যেই গতকাল সোমবার দুপুর ২টায় রমনা থানা থেকে পুলিশ জোবায়েরকে ফোন দিয়ে জানায় যে, গাড়িতে দুজনের লাশ পড়ে আছে এবং তাকে দ্রুত ঢাকায় যেতে বলা হয়। তিনি দুজনের পরিবারকে বিষয়টি জানিয়ে তাদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

    জোবায়ের আল মাহমুদ আজ সকালে জানান যে, জাকির তার গাড়িটি তিন মাস ধরে চালাচ্ছিলেন। তিনি বর্তমানে রমনা থানায় রয়েছেন এবং দুজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আছে। বেলা ১১টার দিকে লাশ দুটি তাদের কাছে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে।

    নিহত মিজানের প্রতিবেশী ও চাটখিলের রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোবারক উল্লাহ জানান, মিজান তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন এবং তিনি ড্রেজার চালিয়ে ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেটকারে মৃত দু’জনের পরিচয় মিলেছে

    আপডেট সময় ০১:১২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

    রাজধানীর মৌচাকে অবস্থিত ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পার্কিংয়ে একটি প্রাইভেটকার থেকে উদ্ধার হওয়া দুজনের পরিচয় জানা গেছে। নিহত দুজন নোয়াখালীর চাটখিল থেকে ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন চিকিৎসাধীন এক শিশুকে আনতে। গাড়িটির মালিক, যিনি তাদের সঙ্গে নোয়াখালী থেকে গিয়েছিলেন, পরে বাসে করে ফিরে আসেন। গাড়িটির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

    নিহত দুজন হলেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ মিজান এবং একই উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের জাকির হোসেন। এর মধ্যে জাকির হোসেন ছিলেন গাড়িটির চালক। গাড়ির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ বলেন, জাকির ও মিজান দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তিনি তার স্ত্রীর বড় ভাইকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে শনিবার রাতে ঢাকা যান।

    এ সময় জাকির এবং তার বন্ধু মিজানও গাড়িতে ওঠেন। মিজান প্রতিবেশী এক শিশুকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীর বড় ভাইকে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়ার পর রোববার ভোরে তারা গাড়ি নিয়ে মালিবাগ এলাকায় পৌঁছান। এরপর জাকির তাকে মালিবাগ থেকে নোয়াখালীর একটি বাসে তুলে দেন।

    জোবায়ের আল মাহমুদ জানান, বিদায় নেওয়ার সময় জাকির তাকে বলেছিলেন যে, বেলা ১১টার দিকে রোগীকে ছাড়পত্র দেবে এবং ততক্ষণ তারা গাড়িতেই ঘুমাবেন। এরপর জোবায়ের জাকিরকে ফোন করে পাননি। রাত ৮টা পর্যন্ত একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

    ফোন না ধরায় জোবায়ের জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে গাড়িটির অবস্থান দেখেন। তিনি বলেন, “যতবারই ট্র্যাক করছি, দেখি গাড়ি হাসপাতালের পার্কিংয়ে। উপায় না দেখে পরদিন জাকিরের নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ফোন দিই। তিনিও ফোন ধরেননি। এরপর যাদের রোগী আনতে গেছেন, তারাও বেশ কয়েকবার ফোন দেন। কিন্তু মিজান-জাকিরের সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।”

    এর মধ্যেই গতকাল সোমবার দুপুর ২টায় রমনা থানা থেকে পুলিশ জোবায়েরকে ফোন দিয়ে জানায় যে, গাড়িতে দুজনের লাশ পড়ে আছে এবং তাকে দ্রুত ঢাকায় যেতে বলা হয়। তিনি দুজনের পরিবারকে বিষয়টি জানিয়ে তাদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

    জোবায়ের আল মাহমুদ আজ সকালে জানান যে, জাকির তার গাড়িটি তিন মাস ধরে চালাচ্ছিলেন। তিনি বর্তমানে রমনা থানায় রয়েছেন এবং দুজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আছে। বেলা ১১টার দিকে লাশ দুটি তাদের কাছে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে।

    নিহত মিজানের প্রতিবেশী ও চাটখিলের রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোবারক উল্লাহ জানান, মিজান তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন এবং তিনি ড্রেজার চালিয়ে ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।