গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ শেষে ফেরার পথে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের বহনকারী গাড়িবহরে আবারও হামলার ঘটনা ঘটেছে। সমাবেশস্থল ত্যাগের পরপরই গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে অতর্কিতভাবে হামলার শিকার হন এনসিপি নেতারা।

এ সময় একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা সার্জিস আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, নাহয় ফিরব না।” তিনি আরও দাবি করেন, “গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপর আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে।

গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র জনতা জেগে উঠুন—দালালদের কবর রচনার আজই শেষ দিন।” এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের জানান, তারা গোপালগঞ্জ শহর ছাড়ার সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে সমবেত হওয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের হামলার মুখে পড়েন। তিনি বলেন, “আমরা এখন একটি জায়গায় অবরুদ্ধ। প্রশাসন আমাদের বলেছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু বাস্তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ছিল।”

এর আগে, শহরের সমাবেশস্থল থেকে বের হওয়ার সময় নেতাদের গাড়িবহরের ওপর ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা নেতাদের শহর থেকে নিরাপদে বের করার চেষ্টা করলেও, হামলার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে আবার তাদের শহরের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।

একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারাও হামলার শিকার হন এবং ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এনসিপি নেতাদের গাড়ি বহর সরিয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ সদস্যরা তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান।

এই ঘটনায় গোটা গোপালগঞ্জে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এনসিপির দাবি, সরকারদলীয় কর্মীদের এই হামলা পরিকল্পিত এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা তাদের নিরাপত্তা প্রশ্নে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।