রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই মডেলের যুদ্ধবিমান। এটি নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলায় অবস্থিত বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়ন করেছিল। উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় বলে নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

দুপুর ১টা ৮ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পায়। ওই ঘটনায় বিমানের পাইলটসহ এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু এবং তারা মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। হতাহতদের পরিচয় এখনো সম্পূর্ণ প্রকাশ করা হয়নি।

আইএসপিআর জানিয়েছে, দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরনের প্রাণহানি এড়াতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে জনবিরল স্থানে নিতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিমানটি দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি দোতলা ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়।

আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ), জাতীয় বার্ন ইউনিটসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসা ও সার্বিক সহযোগিতায় তারা সর্বাত্মকভাবে তৎপর রয়েছে।

ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ দল। দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সরকারি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, বিমানবাহিনীর প্রধান বিদেশ সফরে থাকায় তাঁর পরিবর্তে সহকারী বিমানবাহিনী প্রধান (প্রশাসন) ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধার তৎপরতা তদারকি করছেন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানানো হয়েছে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে।