ঢাকা ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    শেখ হাসিনা-কামালসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১১:০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

    জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর)। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

    এর আগে গত ২৬ আগস্ট নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। সেদিন আদালতে সাক্ষ্য দেন পাঁচজন। তারা হলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মফিজুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরুল ইসলাম, একই হাসপাতালের ডা. মোস্তাক আহমেদ, ফেনীর ব্যবসায়ী আহত নাসির উদ্দিন এবং শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের নানা মো. সাঈদুর রহমান।

    এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ২৯ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি দিয়েছেন। সাক্ষ্য শেষে শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন জেরা করেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্যরা।

    গত ২৫ আগস্ট অষ্টম দিনের শুনানিতে পাঁচজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। তারা হলেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী, একই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা, শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার এবং শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের মা হোসনে আরা বেগম।

    ২৪ আগস্ট সপ্তম দিনের শুনানিতে সাক্ষ্য দেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী মো. গিয়াস উদ্দিন, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম এবং কুষ্টিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম। এর আগে ২০ আগস্ট ষষ্ঠ দিনে সাক্ষ্য দেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ পারভীন, ইবনে সিনা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুল বান্না এবং শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের মা সোনিয়া জামাল।

    ১৮ আগস্ট পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে অংশ নেন শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল এবং রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন। এর আগের দিন ১৭ আগস্ট চারজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। তারা হলেন সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম।

    ৬ আগস্ট আদালতে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রিনা মুর্মু ও সাংবাদিক একেএম মঈনুল হক। ৪ আগস্ট সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন। এর আগে ৩ আগস্ট মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।

    এই মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। তবে তিনি নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। কাঠগড়ায় তার উপস্থিতিতেই সাক্ষীরা একে একে জবানবন্দি দিচ্ছেন।

    উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।

    আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে মোট ৮১ জনকে। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    শেখ হাসিনা-কামালসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

    আপডেট সময় ১১:০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর)। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

    এর আগে গত ২৬ আগস্ট নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। সেদিন আদালতে সাক্ষ্য দেন পাঁচজন। তারা হলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মফিজুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মনিরুল ইসলাম, একই হাসপাতালের ডা. মোস্তাক আহমেদ, ফেনীর ব্যবসায়ী আহত নাসির উদ্দিন এবং শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের নানা মো. সাঈদুর রহমান।

    এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ২৯ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি দিয়েছেন। সাক্ষ্য শেষে শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন জেরা করেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্যরা।

    গত ২৫ আগস্ট অষ্টম দিনের শুনানিতে পাঁচজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। তারা হলেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী, একই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা, শহীদ মারুফ হোসেনের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার এবং শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের মা হোসনে আরা বেগম।

    ২৪ আগস্ট সপ্তম দিনের শুনানিতে সাক্ষ্য দেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অফিস সহকারী মো. গিয়াস উদ্দিন, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম এবং কুষ্টিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম। এর আগে ২০ আগস্ট ষষ্ঠ দিনে সাক্ষ্য দেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ পারভীন, ইবনে সিনা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুল বান্না এবং শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের মা সোনিয়া জামাল।

    ১৮ আগস্ট পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে অংশ নেন শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল এবং রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন। এর আগের দিন ১৭ আগস্ট চারজন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। তারা হলেন সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম।

    ৬ আগস্ট আদালতে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রিনা মুর্মু ও সাংবাদিক একেএম মঈনুল হক। ৪ আগস্ট সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে পঙ্গু হওয়া শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন। এর আগে ৩ আগস্ট মামলার সূচনা বক্তব্যের পর প্রথম সাক্ষী হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ।

    এই মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। তবে তিনি নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। কাঠগড়ায় তার উপস্থিতিতেই সাক্ষীরা একে একে জবানবন্দি দিচ্ছেন।

    উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।

    আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে মোট ৮১ জনকে। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।