ঢাকা ১০:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, ক্যাম্পাসজুড়ে নীরবতা

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ১১:২৯:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

    স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর আজ সোমবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া এই দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি এবং ক্যাম্পাসজুড়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। তবে প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ পরীক্ষাসহ অন্যান্য দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষের কারণে গত রোববার থেকে সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে এবং ক্লাস প্রায় বন্ধ। ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আজ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে এবং আগামীকাল ক্লাস চলবে কি না, তা শিগগিরই জানানো হবে।

    শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে গতকাল বেলা ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় ক্যাম্পাস-সংলগ্ন জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের প্রায় ২০০ জনই শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থী এখনো নগরের দুটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, এবং একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

    সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এক ছাত্রীকে তার বাসার দারোয়ান কর্তৃক মারধরের ঘটনা থেকে। ওই ছাত্রী জানান, দারোয়ান তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং প্রতিবাদ করলে তাকে চড় ও লাথি মারেন। এই ঘটনার খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে ধরতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে রড, পাইপ, কাঠের লাঠি, পাথর ও রামদা নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ গ্রামের অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে অনেক শিক্ষার্থীকে আটকে মারধর করা হয়।

    সংঘর্ষের পরদিন বেলা দুইটার দিকে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। রাত প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুই পক্ষ সরে যায়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

    পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি এবং কেউ আটকও নেই। হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওছার মোহাম্মদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
    বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং আহত শিক্ষার্থীদের সব চিকিৎসার খরচ বহন করছে। তিনি আশা করেন, আগামীকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক হবে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, ক্যাম্পাসজুড়ে নীরবতা

    আপডেট সময় ১১:২৯:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর আজ সোমবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া এই দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি এবং ক্যাম্পাসজুড়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। তবে প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ পরীক্ষাসহ অন্যান্য দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে।

    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষের কারণে গত রোববার থেকে সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে এবং ক্লাস প্রায় বন্ধ। ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আজ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে এবং আগামীকাল ক্লাস চলবে কি না, তা শিগগিরই জানানো হবে।

    শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে গতকাল বেলা ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় ক্যাম্পাস-সংলগ্ন জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের প্রায় ২০০ জনই শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থী এখনো নগরের দুটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, এবং একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

    সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এক ছাত্রীকে তার বাসার দারোয়ান কর্তৃক মারধরের ঘটনা থেকে। ওই ছাত্রী জানান, দারোয়ান তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং প্রতিবাদ করলে তাকে চড় ও লাথি মারেন। এই ঘটনার খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে ধরতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে রড, পাইপ, কাঠের লাঠি, পাথর ও রামদা নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ গ্রামের অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে অনেক শিক্ষার্থীকে আটকে মারধর করা হয়।

    সংঘর্ষের পরদিন বেলা দুইটার দিকে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। রাত প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুই পক্ষ সরে যায়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

    পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি এবং কেউ আটকও নেই। হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওছার মোহাম্মদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
    বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং আহত শিক্ষার্থীদের সব চিকিৎসার খরচ বহন করছে। তিনি আশা করেন, আগামীকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক হবে।