ঢাকা ১২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

    সংস্কারে ১২ দফায় রাজনৈতিক ঐকমত্যকে ইতিবাচক বললেন মির্জা ফখরুল

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৬:৪৭:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে চলমান সংস্কার আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর ১২টি বিষয়ে ঐকমত্যকে “ইতিবাচক অগ্রগতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

    মির্জা ফখরুল বলেন, সংবাদমাধ্যমে সংস্কার সংক্রান্ত ইতিবাচক খবর দেখে তিনি আশাবাদী হয়েছেন। “আমরা খুব খুশি হই, যখন দেখি ইতিবাচক কিছু হচ্ছে। আজকেই দেখলাম, ১২টা মৌলিক বিষয়ের সংস্কারে সব রাজনৈতিক দল একমত। এটিই তো রাজনীতির সৌন্দর্য।” তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ ও তার দলের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

    বিএনপির সংস্কার উদ্যোগের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “সংস্কারের চিন্তাটাই তো আমাদের। জিয়াউর রহমান একদলীয় বাকশাল থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্র। বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক সংস্কার—সবকিছুর ভিত্তি তিনিই গড়ে দিয়েছেন।” তিনি আরও যোগ করেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় রূপান্তর করে আরেকটি বড় সংস্কারের পথ দেখিয়েছেন।

    সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন, “আমরা সংস্কারকে ভয় পাই না, বরং স্বাগত জানাই। তবে যেসব চিন্তাভাবনা জনগণের বোধগম্য নয়, যেমন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি (PR), সেগুলো বাস্তবায়নের আগে দেশবাসীর মনস্তত্ত্ব বুঝতে হবে। PR নিয়ে যারা জোর করে কিছু চাপিয়ে দিতে চায়, আমরা তাদের চিন্তা সমর্থন করি না।”

    ভোটের পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে ভোটব্যবস্থায় দেশের মানুষ অভ্যস্ত, সেটিই বজায় রাখতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার এমন একটি নির্বাচন নিশ্চিত করুক, যেখানে জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।” চাঁদা আদায়ের অভিযোগে চার সমন্বয়ক গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গেও ফখরুল দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “হাজার হাজার কর্মী প্রাণ দিল, ইলিয়াস আলীর মতো নেতারা গুম হলেন—এই ত্যাগের তো একটা মূল্য থাকা দরকার। এটা ভুলে গেলে আমাদের রাজনীতি মূল্যহীন হয়ে পড়ে।”

    শিশু একাডেমি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ফখরুল বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শিশুদের বিকাশের কথা চিন্তা করে একাডেমি স্থাপন করেছিলেন। হাইকোর্টের জায়গা হোক কিংবা অন্য কেউ দাবি করুক—একাডেমি সরিয়ে নেওয়া হলে সেটি হবে জাতির ক্ষতি।”

    স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুকে স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “তিনি ছিলেন বিরল প্রতিভার অধিকারী। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করা উচিত।” সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। আলোচনায় অংশ নেন আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমান, তাহসিনা রুশদীর লুনা, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হেলেন জেরিন খান, কামরুজ্জামান রতনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। প্রয়াত শফিউল বারী বাবুর পরিবার, ছাত্রদলের সাবেক নেতাকর্মী ও সংবাদকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন এই স্মরণসভায়।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    সংস্কারে ১২ দফায় রাজনৈতিক ঐকমত্যকে ইতিবাচক বললেন মির্জা ফখরুল

    আপডেট সময় ০৬:৪৭:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

    জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে চলমান সংস্কার আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর ১২টি বিষয়ে ঐকমত্যকে “ইতিবাচক অগ্রগতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

    মির্জা ফখরুল বলেন, সংবাদমাধ্যমে সংস্কার সংক্রান্ত ইতিবাচক খবর দেখে তিনি আশাবাদী হয়েছেন। “আমরা খুব খুশি হই, যখন দেখি ইতিবাচক কিছু হচ্ছে। আজকেই দেখলাম, ১২টা মৌলিক বিষয়ের সংস্কারে সব রাজনৈতিক দল একমত। এটিই তো রাজনীতির সৌন্দর্য।” তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ ও তার দলের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

    বিএনপির সংস্কার উদ্যোগের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “সংস্কারের চিন্তাটাই তো আমাদের। জিয়াউর রহমান একদলীয় বাকশাল থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্র। বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক সংস্কার—সবকিছুর ভিত্তি তিনিই গড়ে দিয়েছেন।” তিনি আরও যোগ করেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় রূপান্তর করে আরেকটি বড় সংস্কারের পথ দেখিয়েছেন।

    সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন, “আমরা সংস্কারকে ভয় পাই না, বরং স্বাগত জানাই। তবে যেসব চিন্তাভাবনা জনগণের বোধগম্য নয়, যেমন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি (PR), সেগুলো বাস্তবায়নের আগে দেশবাসীর মনস্তত্ত্ব বুঝতে হবে। PR নিয়ে যারা জোর করে কিছু চাপিয়ে দিতে চায়, আমরা তাদের চিন্তা সমর্থন করি না।”

    ভোটের পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে ভোটব্যবস্থায় দেশের মানুষ অভ্যস্ত, সেটিই বজায় রাখতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার এমন একটি নির্বাচন নিশ্চিত করুক, যেখানে জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।” চাঁদা আদায়ের অভিযোগে চার সমন্বয়ক গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গেও ফখরুল দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “হাজার হাজার কর্মী প্রাণ দিল, ইলিয়াস আলীর মতো নেতারা গুম হলেন—এই ত্যাগের তো একটা মূল্য থাকা দরকার। এটা ভুলে গেলে আমাদের রাজনীতি মূল্যহীন হয়ে পড়ে।”

    শিশু একাডেমি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ফখরুল বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শিশুদের বিকাশের কথা চিন্তা করে একাডেমি স্থাপন করেছিলেন। হাইকোর্টের জায়গা হোক কিংবা অন্য কেউ দাবি করুক—একাডেমি সরিয়ে নেওয়া হলে সেটি হবে জাতির ক্ষতি।”

    স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুকে স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “তিনি ছিলেন বিরল প্রতিভার অধিকারী। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করা উচিত।” সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। আলোচনায় অংশ নেন আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমান, তাহসিনা রুশদীর লুনা, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হেলেন জেরিন খান, কামরুজ্জামান রতনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। প্রয়াত শফিউল বারী বাবুর পরিবার, ছাত্রদলের সাবেক নেতাকর্মী ও সংবাদকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন এই স্মরণসভায়।