ঢাকা ০৭:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায় পেলেন শিক্ষক সায়েদুর রহমান

    নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
    • আপডেট সময় ০৪:৩৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
    • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

    চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েদুর রহমান সাইদকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায় জানানো হয়েছে। দীর্ঘ ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের পর তার অবসরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ রোববার (৩১ আগস্ট) পরিণত হয় আবেগঘন পরিবেশে।

    বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিদায় অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, সহকর্মী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। শিক্ষককে বিদায় জানাতে আসা সবার চোখেমুখে ছিল আবেগ ও ভালোবাসার ছাপ।
    বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক সায়েদুর রহমান বলেন, “প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে আছি। আজ প্রিয় জায়গা ছেড়ে যেতে হচ্ছে। এমন বিদায় আমাকে অভিভূত করেছে। সবার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কারণেই আজকের এই দিন সম্ভব হয়েছে।”

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদাউস বলেন, “১৯৯৫ সাল থেকে আমরা একসঙ্গে পথ চলেছি। আজ বিদায় নিচ্ছেন প্রিয় সহকর্মী। তিনি ছিলেন আমাদের পরামর্শদাতা ও পথচলার সাথি। তার সুস্থতা ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার দোয়া কামনা করছি।”

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু। তিনি বলেন, “এ রকম রাজকীয় বিদায় শুধু একটি বিদ্যালয়ের ইতিহাস নয়, এ অঞ্চলের শিক্ষাঙ্গণের জন্যও গৌরবের দিন। একজন প্রকৃত শিক্ষক মানুষের হৃদয়ে কীভাবে স্থান করে নিতে পারেন, আজকের এই আয়োজন তার প্রমাণ।”

    বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমুর রহমান সবুজ বলেন, “আমি নিজেও এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আজ প্রিয় স্যারকে রাজকীয়ভাবে বিদায় দিতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। এটি প্রমাণ করে, শিক্ষা ও শিক্ষকের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ এখনো অটুট রয়েছে।”

    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মন্টু মিয়া, সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা সামসুল আলম, আব্দুস সালাম, কৃষকদল নেতা তোতাম, সাবেক মেম্বার ফরজ আলী, আব্দুর রব পটল, মজিবর বিশ্বাসসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বরা। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন শিক্ষক আবু বক্কর।

    অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সহকর্মীরা বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে করে নিজ গ্রাম ছাতিয়ানতলায় পৌঁছে দেন। এ সময় গ্রামজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের অশ্রু আর মানুষের আবেগ মিলে সেই বিদায় অনুষ্ঠান পরিণত হয় এক অবিস্মরণীয় মুহূর্তে।

    নিউজটি শেয়ার করুন

    ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায় পেলেন শিক্ষক সায়েদুর রহমান

    আপডেট সময় ০৪:৩৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

    চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েদুর রহমান সাইদকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায় জানানো হয়েছে। দীর্ঘ ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের পর তার অবসরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ রোববার (৩১ আগস্ট) পরিণত হয় আবেগঘন পরিবেশে।

    বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিদায় অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, সহকর্মী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। শিক্ষককে বিদায় জানাতে আসা সবার চোখেমুখে ছিল আবেগ ও ভালোবাসার ছাপ।
    বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক সায়েদুর রহমান বলেন, “প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে আছি। আজ প্রিয় জায়গা ছেড়ে যেতে হচ্ছে। এমন বিদায় আমাকে অভিভূত করেছে। সবার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কারণেই আজকের এই দিন সম্ভব হয়েছে।”

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদাউস বলেন, “১৯৯৫ সাল থেকে আমরা একসঙ্গে পথ চলেছি। আজ বিদায় নিচ্ছেন প্রিয় সহকর্মী। তিনি ছিলেন আমাদের পরামর্শদাতা ও পথচলার সাথি। তার সুস্থতা ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার দোয়া কামনা করছি।”

    অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু। তিনি বলেন, “এ রকম রাজকীয় বিদায় শুধু একটি বিদ্যালয়ের ইতিহাস নয়, এ অঞ্চলের শিক্ষাঙ্গণের জন্যও গৌরবের দিন। একজন প্রকৃত শিক্ষক মানুষের হৃদয়ে কীভাবে স্থান করে নিতে পারেন, আজকের এই আয়োজন তার প্রমাণ।”

    বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমুর রহমান সবুজ বলেন, “আমি নিজেও এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আজ প্রিয় স্যারকে রাজকীয়ভাবে বিদায় দিতে পেরে গর্বিত বোধ করছি। এটি প্রমাণ করে, শিক্ষা ও শিক্ষকের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ এখনো অটুট রয়েছে।”

    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মন্টু মিয়া, সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা সামসুল আলম, আব্দুস সালাম, কৃষকদল নেতা তোতাম, সাবেক মেম্বার ফরজ আলী, আব্দুর রব পটল, মজিবর বিশ্বাসসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বরা। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন শিক্ষক আবু বক্কর।

    অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সহকর্মীরা বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে করে নিজ গ্রাম ছাতিয়ানতলায় পৌঁছে দেন। এ সময় গ্রামজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের অশ্রু আর মানুষের আবেগ মিলে সেই বিদায় অনুষ্ঠান পরিণত হয় এক অবিস্মরণীয় মুহূর্তে।