সোহরাওয়ার্দীতে ইতিহাস গড়ল জামায়াত: লাখো মানুষের ঢল, ৭ দফা দাবিতে জাতীয় সমাবেশ

- আপডেট সময় ০১:০০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সমাবেশে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, ফজরের নামাজের পর থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সমাবেশ শুরুর ছয় ঘণ্টা আগেই উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মাঠের বাইরেও হাজার হাজার মানুষ অবস্থান নেন, যারা বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চযোগে এসে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন।
দলীয় নেতাদের দাবি, সমাবেশে অংশ নিতে দেশজুড়ে প্রায় ১০ লাখ নেতাকর্মীর উপস্থিতি প্রত্যাশিত। অনেকেই পরেছেন দলীয় মনোগ্রাম খচিত টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি, কারও হাতে ছিল জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা খচিত পতাকা ও ফেস্টুন। দৃশ্যত রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে তৈরি হয় এক ব্যতিক্রমধর্মী রাজনীতিক জমায়েতের পরিবেশ।
সমাবেশে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেছে জামায়াতে ইসলামী। এর মধ্যে রয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টসহ বিভিন্ন সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের সকল স্তরে মৌলিক সংস্কার, ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি।
সমাবেশ সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে জামায়াতের পক্ষ থেকে দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। রাজধানীর হাইকোর্ট, শাহবাগ, মৎস্য ভবনসহ বিভিন্ন স্পটে সকাল থেকেই দেখা যায় ইউনিফর্ম পরিহিত স্বেচ্ছাসেবকদের অবস্থান। তারা আগত নেতাকর্মীদের সঠিক গেট, অবস্থান ও অন্যান্য নির্দেশনায় সহযোগিতা করছেন।
মৎস্য ভবন এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রধান মাসুদুর রহমান জানান, “রাজধানীজুড়ে আমাদের ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রয়েছেন প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।” তিনি আরও বলেন, “সমাবেশে আগতদের সহযোগিতাই আমাদের মূল দায়িত্ব।”
শুক্রবার রাত থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে জড়ো হতে শুরু করে উদ্যানের চারপাশে। ভোর থেকে আরও সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। সকাল গড়িয়ে দুপুরের দিকে মানুষের ভিড় এতটাই বেড়ে যায় যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান শুধু সমাবেশ নয়, রূপ নেয় এক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দৃশ্যপটে।
দলটির নেতারা বলছেন, এই সমাবেশ শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং এটি ইনসাফ, ইনকিলাব ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি জনগণের প্রত্যাশার বহিঃপ্রকাশ।