সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষের ঢল: জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে ঐতিহাসিক দৃশ্যপট

- আপডেট সময় ০১:০৬:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / ২৬১ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকা জাতীয় সমাবেশ শুরুর আগেই রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখ লাখ মানুষের ঢল নেমেছে। সারা দেশ থেকে আসা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতিতে উদ্যানটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। শুধু উদ্যান নয়, বাইরের রাস্তাঘাটেও অবস্থান নিয়েছেন আরও হাজার হাজার জামায়াত কর্মী।
আজ শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উদ্যান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সমাবেশ শুরু হওয়ার অনেক আগেই সারাদেশ থেকে দলবেঁধে লোকজন মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন। কেউ এসেছেন ট্রেনে, কেউ বাসে, কেউবা নৌপথে। নেতাকর্মীদের হাতে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ও ব্যানার দেখা গেছে। অনেকে জামায়াতের মনোগ্রামযুক্ত টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি পরে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
ঢাকার বাইরে থেকে আগত এক জামায়াতকর্মী জানান, “আমাদের উপজেলা থেকে অন্তত ৪০টি বাস এসেছে, এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে।” সিরাজগঞ্জ থেকে আগত আরেক কর্মী বলেন, “আমরা প্রায় ৩০-৪০ হাজার মানুষ ট্রেন ও বাসে করে এখানে এসেছি। অনেকে শুক্রবার রাত থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবস্থান করছেন।”
সমাবেশ সুশৃঙ্খলভাবে আয়োজন ও পরিচালনার লক্ষ্যে জামায়াত কর্তৃপক্ষ ২০ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত করেছে। ভোর থেকেই হাইকোর্ট, মৎস্য ভবন, শাহবাগসহ উদ্যানসংলগ্ন বিভিন্ন স্পটে এসব স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করছেন। সবার পরনে ছিল একই ধরনের ইউনিফর্ম। তারা আগত নেতাকর্মীদের যথাযথ গেট দিয়ে প্রবেশে সহায়তা করেন এবং এলাকাভিত্তিক সংগঠনের লোকজনকে নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান নিতে নির্দেশনা দেন।
জামায়াতে ইসলামীর এই জাতীয় সমাবেশ ৭টি গুরুত্বপূর্ণ দাবিকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে— অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা, অতীতের সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা, রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন, ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র কার্যকর করা, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা, সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম জামায়াতে ইসলামী এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করছে। সমাবেশ ঘিরে নেতাকর্মীদের বিপুল অংশগ্রহণ এবং সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা এক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দৃশ্যপট তৈরি করেছে।